রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ১৬ নং মির্জাপুর ইউনিয়নের সফল চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর অত্র উপজেলার সেক্রেটারি মোঃ শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগ এমএফ হাসানোর চেষ্টা অভিযোগ উঠেছে বিএনপির অঙ্গসংগঠন রংপুর জেলা জিয়া মঞ্চের সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ এর বিরুদ্ধে।

২২-০৫-২৫ ইং রোজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে পাঠানো এক বিবৃতিতে মিঠাপুকুর উপজেলা জামায়াত ইসলামীর সেক্রেটারি ও ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম দলীয় কোন্দলের কারণে তাকে ফাঁসানার চেষ্টা ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৩০-০৪-২৫ ইং তারিখ রোজ বুধবার মিঠাপুকুর উপজেলার ১৬ নং মির্জাপুর ইউনিয়নের ভগবতীপুর তুলসীডাঙ্গা এলাকায় রংপুর জেলা জিয়া মঞ্চের সদস্য সচিব শাকিল এর নেতৃত্বে ও স্থানীয় মাটি ব্যবসায়ী আব্দুল জলিলের স্কেবেটর (ভেকু)দ্বারা অবৈধভাবে মাটি খনন করে বিক্রির সময় মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ভূমি) দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি মাটি বহনকারী ট্রাক্টর ও একটি স্কেবেটর(ভেকু) জব্দ করে। এ সময় ভেকু ও ট্রাক্টর এর মালিক পালিয়ে গেলে অভিযানের স্থলে জরিমানা আদায় করতে ব্যর্থ হয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট(ভুমি)ভেকু ও ট্রাক্টরটি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও জামায়াতের সেক্রেটারী শফিকুল ইসলামের জিম্মায় প্রদান করে। আইন অনুযায়ী জরিমানা অথবা মামলা হওয়ার কথা ছিল।এমতাবস্থায় জিয়া মঞ্চের সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ চেয়ারম্যানকে মোবাইল ফোনে বারবার অনুরোধ করে,যেন ভূমি অফিসারের কাছে সুপারিশ করে আমাদের জরিমানা যেন কম হয়।
কম বেশি বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ভুমি)মহোদয় কি বলেছে  বিষয়টি নিয়ে মোবাইল ফোনে জিয়া মঞ্চ নেতার সঙ্গে চেয়ারম্যানের কথাবার্তা রেকর্ড করে। চেয়ারম্যান জব্দকৃত ভেকুটি  ছেড়ে দেওয়ার জন্য ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে বলে সোশ্যাল  মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেয় জিয়া মঞ্চের সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ। এই ঘটনাটি বিএনপির একদলীয় সাংবাদিক দিয়ে জামায়াত নেতা ও চেয়ারম্যান শফিকুল এর বিরুদ্ধে দুই লাখ টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশ  করে জিয়া মঞ্চ নেতা শাকিল।
এ বিষয়ে শাকিল আহমেদ জানান, আমি বিএনপি করি বিধায় চেয়ারম্যান আমার বালু মাটির পয়েন্টে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট( ভূমি) কে নিয়ে এসেছিল। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ভুমি) নাম করে আমার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছিল। এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে কল রেকর্ড আমার কাছে আছে।এরপর গোপনে ভেকুর  ভাড়াটিয়া  মালিক জুয়েল এর কাছে টাকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। আমি এর ন্যায্য বিচার চাই।
ভাড়াটিয়া মালিক দাবীকারী স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী জুয়েল জানান, জিয়া মঞ্চের সদস্য সচিব শাকিল ভাইরা যখন ভেকু ছাড়তে ব্যর্থ হয় তখন আমি ব্যক্তিগতভাবে চেয়ারম্যান মহোদয়ের কাছে ব্যক্তিগতভাবে  দুই লাখ টাকা সাদা দাবি করে।আমি গত ১০-০৫-২৫ ইং তারিখ রোজ শনিবার রাত আনুমানিক ৯ টা থেকে ১১ টার মধ্যে বৈরাতী জামে মসজিদ সংলগ্ন তার ব্যক্তিগত অফিসে গিয়ে দেখা করে ২ লাখ টাকা দেই।টাকা দেওয়ার পর আমার ভাড়া করা জব্দ ভেকুটি মালিকের কাছে পৌঁছে দেয়। তবে ভেকুর ভাড়াটিয়া মালিক জুয়েল এ সময় প্রতিবেদকের কাছে মালিকানার কোন প্রমাণ দেখাতে পারেনি। একই সাথে চেয়ারম্যানকে গোপনে দুই লাখ টাকা চাঁদা দিয়েছে তার কোন সাক্ষ্য প্রমাণপত্র নাই বলে প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেছে। 
এদিকে ওই ভেকুর ভাড়াটিয়া মালিক আব্দুল জলিল বলেন,আমার ভেকুটি বিএনপির লোক শাকিলা ও জুয়েল ভাড়া নিয়েছিল। পরে শুনি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ভূমি)ভেকুটি জব্দ করেছে। ওরা ২ দিন ঘোরাঘুরির পর যখন ছাড়াতে পারে নাই তখন আমি ভেকু মালিককে  জানাইয়া তার সহযোগিতা  নিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ভূমি)কে অনুরোধ করি। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট স্যার সদয় হলে চেয়ারম্যান এর কাছেগিয়ে মুচলেকায় স্বাক্ষর করতে বলে।ভবিষ্যতে এরকম কাজ আর করব না। পরে আমি চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে মুচলেকা কাগজে স্বাক্ষর করে ভেকুটি নিয়ে মালিকের কাছে পৌঁছে দেই। এখানে কোন আর্থিক লেনদেন হয়নি। জুয়েল যদি ভাড়াটিয়া  মালিক হয়েই থাকে তাহলে মুচলেকায় স্বাক্ষর দেয় নাই কেন? আর মালিকানার প্রমাণ দেখাক।এটা রাজনীতির কারণে চেয়ারম্যান কে বিপদে ফেলতে এ ধরনের কাজ করেছে। 
এ বিষয়ে স্থানীয় আদিপুর এলাকার সাগর জানান, আওয়ামী সরকার পরিবর্তনের পর বিএনপি'র দলীয় ক্ষমতা দেখিয়ে মির্জাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ বালু উত্তোলন করে আসছে জিয়া মঞ্চের সদস্য সচিব শাকিল ও তার দলীয় কর্মী জুয়েল। ইতিমধ্যেই বালু উত্তোলনকৃত বালু পরিবহনের ফলে অত্র ইউনিয়নের কয়েক কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা   চলাচলের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এসব কাজে বাধা দেওয়ার ফলে শাকিল ও জুয়েল ক্ষিপ্ত হইয়া উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবেই চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে জিয়া মঞ্চের নেতা ও তার কর্মী জুয়েল। 

এবিষয়ে স্থানীয় আদিতপুর গ্রামের সাগর বলেন,সরকার পরিবর্তনের পর বিএনপির দলীয় ক্ষমতা দেখিয়ে মির্জাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গা থেকে অবৈধ বালু মাটি উত্তোলন করে আসছে জিয়া মঞ্চের নেতা শাকিল ও তার দলীয় কর্মী জুয়েল। ইতিমধ্যে তাদের অবৈধভাবে উত্তোলনকৃত বালু পরিবহনের ফলে মির্জাপুর ইউনিয়নের কয়েক কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে।চেয়ারম্যান এসব অবৈধ কাজে বাঁধা দেয়ায় পূর্ব থেকেই শাকিল ও জুয়েল ক্ষিপ্ত ছিলো। এই কারণেই উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে চেয়ারম্যানকে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে জিয়া মঞ্চ নেতা শাকিল।
মিঠাপুকুর উপজেলা বাংলাদেশ  জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি ও ১৬ নং মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন,সরকার পরিবর্তনের পর স্থানীয় শাকিল ও তার কর্মী জুয়েল বিএনপি'র প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন শুরু করলে আমি বেশ কয়েকবার বাধা দিয়েছিলাম। সে কারণেই আমাকে অপমান অপদস্ত করার জন্যই 
ফাঁসানো হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট স্যার যাতে কম জরিমানা করে এ বিষয়ে আমাকে বারবার অনুরোধ করে। এই জরিমানার টাকা কমবেশি কথাবার্তা বিষয়ে মোবাইল ফোনের রেকর্ডটি সংযোজন বিয়োজন করে  করে আমাকে হেনস্থা ও ফাঁসানোর  করার চেষ্টা করেছে।এখানে কোন অর্থ লেনদেন হয়নি আর আমি চাঁদাও দাবি করিনি। 
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ভূমি) মুলতাসিম বিল্লাহ প্রতিবেদক কে জানান, ভেকু ও বালু বহনকারী ট্রাক্টর জব্দের সময় কাউকে পাওয়া যায়নি বলে জরিমানা করা সম্ভব হয় নি,বিধায় ভেকু ও ট্রাক্টর টি চেয়ারম্যানের জিম্মায় দিয়ে চলে আসি। পরবর্তীতে ভেকুর মালিক এসে পরবর্তীতে অবৈধ বালু উত্তোলন বা বিক্রি  করবে না মর্মে চেয়ারম্যানের কাছে এসে মুচলেকায় স্বাক্ষর দিয়ে ভেকু নিয়ে যায়। এখানে কোন অর্থের লেনদেন হয় নি বিষয়টি ভেকুর মালিক নিশ্চিত করেছে।জুয়েল নামে কেউ মালিকানায় বিষয়ে ছিল বলে আমার জানা নেই।