পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সমতলের জাতিসত্তাদের প্রধান সামাজিক উৎসব ‘চৈত্র সংক্রান্তি’ ও ‘বৈ-সা-বি’ উপলক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ দিনের ছুটি ঘোষণার দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এ দাবিতে মঙ্গলবার (১১ মার্চ ২০২৫) দুপুর ২:৩০টায় উপাচার্য ড. সালেহ হাসান নকীবের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেন বিভিন্ন আদিবাসী ও পাহাড়ি ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামের ১০ ভাষাভাষী পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসুক, সাংগ্রাই, বিজু, বিহু ও সাংক্রান—সংক্ষেপে ‘বৈ-সা-বি’—হাজার বছরের ঐতিহ্যের অংশ। এটি পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ি জাতিসত্তা এবং সমতলের আদিবাসীদের কাছে জাতীয় ও সামাজিক ঐক্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, প্রতি বছর এই উৎসব উদযাপনকালে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকায় শিক্ষার্থীরা পরিবারের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, “বাংলাদেশের অন্যান্য জনগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব পালনের জন্য যেমন দীর্ঘ ছুটি বরাদ্দ থাকে, তেমনি পাহাড়ি ও সমতলের আদিবাসীদের বৃহত্তম সামাজিক উৎসব উদযাপনের জন্যও পর্যাপ্ত ছুটি বরাদ্দ করা প্রয়োজন। উৎসবকেন্দ্রিক ছুটিতে বৈষম্য দূর করা এখন সময়ের দাবি। তাই প্রতি বছর ১২-১৬ এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ দিনের ছুটি ঘোষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।”
স্মারকলিপি গ্রহণকালে উপাচার্য ড. সালেহ হাসান নকীব শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে বলেন, “ছুটির বিষয়ে আমি রেজিস্ট্রারের সঙ্গে আলোচনা করব এবং উৎসবের সময় ছুটি রাখার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব।”
স্মারকলিপি পেশের আগে ৬-১০ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত পাঁচ দিনব্যাপী গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে ২৭৪ জন শিক্ষক, সাংবাদিক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী, সমাজকর্মী, সাংস্কৃতিককর্মী ও বিভিন্ন ক্লাবের সদস্য স্বাক্ষর করেন।
স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সমুজ্জ্বল চাকমা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় জুম্ম শিক্ষার্থী পরিবারের সদস্য শুভাশীষ চাকমা ও বাংলাদেশ কোচ-রাজবংশী-বর্মন ছাত্র সংগঠনের সভাপতি রিংকু বর্মন।
শিক্ষার্থীরা আশা প্রকাশ করেছেন যে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের ন্যায্য দাবি মেনে নেবে এবং যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।