জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আবাসন সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কনফারেন্স কক্ষে অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ সভায় স্থায়ী কংক্রিটের স্থাপনা নির্মাণের পক্ষে মত দেন সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররা।
সভায় লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইফতেখার আলম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোফাইল (ডিপিপি) প্রস্তুত করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় রিসোর্সও মজুত করা হয়েছে। অর্থ ছাড় পেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। সেনাবাহিনী তাদের নিজস্ব ক্যাম্প স্থাপন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করতে প্রস্তুত রয়েছে। প্রথম পর্যায়ের নির্মাণকাজ ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি হল—বাণী ভবন ও হাবিবুর রহমান হল—পুরোপুরি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানাধীন নয়। ডিসি অফিস থেকে ইস্যু করা চিঠি অনুযায়ী এই হল দুটি অস্থায়ীভাবে ব্যবহার করার অনুমতি পাওয়া গেছে। ফলে এখানে কী ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। কঙ্ক্রিটের স্থাপনা নির্মাণের সুবিধা নিয়ে ইফতেখার আলম বলেন, স্টিলের অবকাঠামো নির্মাণে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয়। এর মধ্যে রয়েছে সরু সড়কের কারণে বড় ক্রেন আনার অসুবিধা, পর্যাপ্ত রেডিমেড নির্মাণসামগ্রীর অভাব, অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেশি খরচ, দক্ষ শ্রমিকের ঘাটতি ইত্যাদি। বিপরীতে, কংক্রিটের নির্মাণ খরচ তুলনামূলক কম এবং সময়ও বাঁচে। এমনকি নতুন ক্যাম্পাসে এটি ২০-২৫% কম খরচে করা সম্ভব হবে।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) পারভেজ চৌধুরী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি আমরা বুঝতে পারি। হল দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে থাকলেও অস্থায়ী অবকাঠামো তৈরি করে ব্যবহার করা যাবে। জেলা প্রশাসন সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথেও আলোচনা করা হবে।” সভায় চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে পরবর্তীতে স্থানীয় জনগণ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সেনাবাহিনী এবং জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যার টেকসই সমাধানের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সভায় জানানো হয়।
সভায় উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, শিক্ষার্থী বিষয়ক কমিটির সদস্য, ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ, এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে তাদের মতামত প্রদান করেন।