কোম্পানি আশা করছে, ২০২৫ সালের মধ্যে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা দৈনিক ১৬ কোটি ৪০ লাখ ঘনফুটের চেয়ে আরও সাড়ে ৮ কোটি ঘনফুট বেশি গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যোগ করা সম্ভব হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, বিদ্যমান মজুত শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই নতুন গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধানে মনোযোগী হতে হবে।
প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়া রশিদপুর-৩ নম্বর কূপ পুনঃখননের মাধ্যমে ৫ সেপ্টেম্বর নতুনভাবে গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। গ্যাস প্রাপ্তির সুসংবাদ এনে দিয়েছে পরীক্ষামূলক প্রজ্বলন। এই কূপ থেকে শিগগিরই জাতীয় সঞ্চালন লাইনে দৈনিক ৮০ লাখ ঘনফুট গ্যাস যোগ হবে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, ‘পরীক্ষায় গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। কিছু কার্যক্রম এখনও বাকি, যা এখন সম্পন্ন করা হচ্ছে।’
সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে তিনটি কোম্পানিকে ৫০টি কূপ খনন ও পুনঃখননের লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে। এর মধ্যে সিলেট গ্যাস ফিল্ড কোম্পানির দায়িত্বে রয়েছে ৮টি নতুন কূপ খনন ও ৮টি কূপ পুনঃখনন। এরই মধ্যে অধিকাংশ কাজ শেষ পর্যায়ে।
হরিপুর গ্যাসক্ষেত্রের সিলেট-১০ নম্বর কূপ থেকে এরমধ্যেই জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। এর পাশের আরেকটি কূপ খননের কাজ প্রায় শেষ। একের পর এক কূপ খনন ও পুনঃখননের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস যোগ করছে সিলেট গ্যাস ফিল্ড কোম্পানি।
বর্তমানে কোম্পানিটি জাতীয় সঞ্চালন লাইনে দৈনিক ১৪ কোটি ২০ লাখ ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করছে। ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশাবাদী, ২০২৬ সালের মধ্যে আরও গ্যাস যোগ করা সম্ভব হবে। মো. আব্দুল জলিল প্রামানিক আরও জানান, ‘২০২৬ সালের মধ্যে ছয়টি কূপ থেকে অন্তত ৬০ মিলিয়ন ঘনফুট এবং আরও দুটি কূপ থেকে ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
সব মিলিয়ে সিলেট বিভাগের হরিপুর, রশিদপুর, কৈলাশটিলা ও বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্র সিলেট গ্যাস ফিল্ড কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এসব গ্যাস ফিল্ডে প্রায় ৪ টিসিএফ বা চার লাখ কোটি ঘনফুট গ্যাস মজুত রয়েছে, যা আগামী ৯-১০ বছরের রিজার্ভ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যশোর অঞ্চলের ‘হিং জোনে’ এখনও অনুসন্ধান শুরু হয়নি। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম ও মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এম ফরহাদ হাওলাদার বলেন, এই জোনে সার্ভে করা জরুরি, কারণ গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা এখানে অনেক বেশি।
২০২৮ সালের মধ্যে সিলেট গ্যাস ফিল্ড কোম্পানি, বাপেক্স এবং বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানি মিলে ৬৯টি কূপ খনন এবং ৩১টি কূপ পুনঃখননের মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।