গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় দীর্ঘদিন অব্যবহৃত ও অপরিষ্কার অবস্থায় পড়ে থাকা খাল অবশেষে পরিষ্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পাটগাতী বাসস্ট্যান্ড থেকে টুঙ্গিপাড়া থানা পর্যন্ত প্রায় ২.২ কিলোমিটার দীর্ঘ খাল কচুরিপানা ও জঙ্গলে ভরে গিয়ে দীর্ঘদিন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। জলাবদ্ধতা, দুর্গন্ধ ও মশার উপদ্রবে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ভোগান্তি পোহালেও এবার অবশেষে সেই দুর্ভোগ থেকে মুক্তির আশা করছেন তারা।
রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার উদ্যোগে খাল পরিষ্কারকরণ, রাস্তার দুইপাশের গাছের ডালপালা ছাঁটাই ও জঙ্গল অপসারণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক ফারজানা আক্তার।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নির্বাহী প্রকৌশলী শাহীনুজ্জামান, সহকারী প্রকৌশলী মোঃ ইউসুফ আলী, পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রশাসক ফারজানা আক্তার বলেন,
খাল পরিষ্কার হলে টুঙ্গিপাড়া পৌরবাসী দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে। খালটি ব্যবহার উপযোগী করে তোলা হবে, যাতে জনগণ নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে এবং বর্ষাকালে পানি নিষ্কাশনে আর কোনো সমস্যা না হয়।
তিনি আরও জানান,
খাল ও ড্রেন নিয়মিত পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি আমরা সৌন্দর্যবর্ধন ও আলোকায়ন প্রকল্প হাতে নেবো। খালকে ঘিরে হাঁটার পথ, বসার স্থান এবং সবুজ পরিবেশ তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে।
নির্বাহী প্রকৌশলী শাহীনুজ্জামান বলেন,
পাটগাতী বাস স্ট্যান্ড থেকে টুঙ্গিপাড়া থানা পর্যন্ত প্রায় ২.২ কিলোমিটার দীর্ঘ খালটি দীর্ঘদিন অপরিষ্কার ও অব্যবহৃত অবস্থায় ছিল। এতে কচুরিপানা ও জঙ্গলের সৃষ্টি হয় এবং খালটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যায়। বিষয়টি প্রশাসক মহোদয়কে জানানোর পর তিনি দ্রুত খাল পরিষ্কারের নির্দেশ দেন। আশা করছি শিগগিরই খালটি আগের রূপে ফিরে আসবে।
খাল পরিষ্কারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ উল্লাহ (৪০) বলেন,
আমাদের এই খাল এক সময় খুব উপকারী ছিল। বর্ষার সময় পানি নামার জন্য খালটাই ভরসা ছিল। কিন্তু বহু বছর ধরে কচুরিপানায় ভরে যাওয়ায় জলাবদ্ধতা আর দুর্গন্ধে আমরা ভীষণ কষ্ট পেয়েছি। অবশেষে খাল পরিষ্কার হওয়ায় আমরা খুব খুশি।
আরেক বাসিন্দা রেহানা বেগম (৪৫) বলেন,
আমাদের বাড়ির পাশেই খাল। আগে এত দুর্গন্ধ উঠত যে বসে থাকা যেত না। মশার কারণে রাতে বাচ্চাদের ঘুম হত না। এখন পরিষ্কার হলে নিশ্চয়ই পরিবেশও সুন্দর হবে।
অনেকেই মনে করছেন শুধু একবার পরিষ্কার করলেই হবে না, বরং নিয়মিত খাল ও ড্রেন পরিষ্কার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। স্থানীয় যুবক মোঃ মঈন ইসলাম বলেন,
খাল পরিষ্কার করা সত্যিই ভালো উদ্যোগ। তবে যদি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না হয়, কয়েক মাসের মধ্যে আবার কচুরিপানায় ভরে যাবে। তাই আমরা চাই এটি স্থায়ীভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হোক।
সহকারী প্রকৌশলী, ইউসুফ আলী জানিয়েছেন, খাল পরিষ্কারের পাশাপাশি টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা করা হবে। একইসাথে রাস্তার দুইপাশে গাছের ডালপালা ছাঁটাই ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলবে।
এ সময় এলাকাবাসী খাল পরিষ্কারকরণ কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়ে প্রশাসক ফারজানা আক্তারকে ধন্যবাদ জানান এবং ভবিষ্যতে এ কার্যক্রম নিয়মিত চালিয়ে যাওয়ার দাবি জানান।