পরদিন দুপুরে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আসাদ উদ্দিন মো. আসিফের আদালতে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে হাজির করা হয়। বিচারক ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

কক্সবাজারের নাজিরারটেক উপকূলে ট্রলার থেকে ১০ মরদেহ উদ্ধারের মামলায় ৩ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন মহেশখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খায়ের হোসেন। গত মঙ্গলবার (৯ মে) বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত টানা ২ ঘণ্টা এই জবানবন্দি গ্রহণ করেন কক্সবাজার সদরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্রীজ্ঞান তঞ্চঙ্গা। কক্সবাজার সদর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা (পরিদর্শক) দুর্জয় বিশ্বাস জানিয়েছেন, গত শুক্রবার রাতে মহেশখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খায়ের হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন দুপুরে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আসাদ উদ্দিন মো. আসিফের আদালতে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে হাজির করা হয়। বিচারক ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার আদালতে নেওয়া হলে সেখানে কাউন্সিলর খায়ের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে কাউন্সিলর খায়ের হোসেন কী বলেছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে কী বলেছেন আমি জানি না। ওটা আদালত ভালো জানেন। এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে আদালত তাকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান পরিদর্শক দুর্জয় বিশ্বাস। তিনি বলেন, এই মামলায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি সংক্রান্ত একটি সংবাদ জাতীয় একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে বলে আদালতের দৃষ্টি গোচর হয়েছে, যা উচিৎ ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন বিচারক। মামলার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও আসামি গ্রেপ্তারের পূর্বেই বেআইনিভাবে ১৬৪ ধারার মত গুরুত্বপূর্ণ গোপনীয় রাষ্ট্রীয় দলিল গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এবং গ্রেপ্তার করার আগেই ১৬৪ ধারায় বর্ণিত আসামিদের নাম ঠিকানা সম্পূর্ণ প্রকাশ করার কারণে নথি সংরক্ষণে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার নিদের্শ প্রদান করেছেন আদালত।

১০ মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) আসামি গিয়াস উদ্দিন মুনির আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। যেখানে আসামি জানিয়েছেন, সাগরে নিহত ১০ জনই জেলে বেশে ডাকাত (জলদস্যু) ছিলেন। তারা পরিকল্পিতভাবেই সাগরে জেলের বেশে নেমেছিলেন ডাকাতি (দস্যুতা) করার জন্য। যার মধ্যে চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের কবির হোসাইনের ছেলে সাইফুল ইসলামকে মুনির সামশু মাঝির ট্রলারে পাঠিয়েছিলেন। আর এ ঘটনায় কাউন্সিলর খায়েরও জড়িত। এরপরই তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গিয়াস উদ্দিন মুনির চকরিয়ার বদরখালী এলাকার মো. নুর নবীর ছেলে। এর আগে আসামি বাঁশখালীর বাসিন্দা ফজল কাদের মাঝি ও আবু তৈয়ুব মাঝি এবং মাতারবাড়ির কামাল হোসেন প্রকাশ বাইট্টা কামাল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। প্রসঙ্গত, গত ২৩ এপ্রিল সাগরে ভাসমান একটি ট্রলার থেকে হাত-পা বাঁধা ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।