ডেঙ্গু, ইয়েলো ফিভার, ও জিকা ভাইরাসের মতো মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে এক নতুন পদ্ধতির সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

ডেঙ্গু, ইয়েলো ফিভার, ও জিকা ভাইরাসের মতো মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে এক নতুন পদ্ধতির সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বিশেষ এক প্রক্রিয়ায় পুরুষ মশাদের শ্রবণক্ষমতা অকার্যকর করে দিয়েছেন, যার ফলে তারা স্ত্রী মশাদের সাথ মিলনে অক্ষম হয়ে পড়েছে গবেষণায় দেখা গেছে, মশারা সাধারণত আকাশে উড়ন্ত অবস্থায় মিলন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। এই সময় পুরুষ মশারা স্ত্রী মশার ডানার আকর্ষণীয় শব্দ শুনে তাকে খুঁজে নেয়। গবেষক দলটি পুরুষ মশাদের মধ্যে এই শ্রবণপ্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণকারী এক জেনেটিক পথকে পরিবর্তন করে দেয়, যার ফলে তারা স্ত্রী মশাদের শব্দ শুনতে পাচ্ছে না। এর মাধ্যমে এক খাঁচায় তিন দিন একসাথে থাকার পরেও তারা স্ত্রী মশাদের সাথে মিলনে লিপ্ত হতে ব্যর্থ হয়।গবেষণায় লক্ষ্য করা হয়েছে, নির্দিষ্ট একটি প্রোটিন, “TRPVA, মশাদের শোনার ক্ষমতার জন্য অপরিহার্য। এই প্রোটিনের উপর জেনেটিক পরিবর্তন আনার ফলে মশাদের শ্রবণ সংক্রান্ত নিউরনগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়, যার ফলে স্ত্রী মশাদের ডানার আকর্ষণীয় শব্দগুলো তাদের কাছে ‘বধির কানে’ পড়ে। এর ফলস্বরূপ, এই ‘বধির’ পুরুষ মশারা মিলনে সম্পূর্ণ অক্ষম হয়ে পড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণ (অপরিবর্তিত) পুরুষ মশারা খুব দ্রুত মিলনে অংশগ্রহণ করে এবং প্রায় সব স্ত্রী মশাকে নিষিক্ত করতে সক্ষম হয়, কিন্তু ‘বধির’ পুরুষ মশারা এতে একেবারেই ব্যর্থ। এই গবেষণা সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে জার্মানির ওল্ডেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মশার প্রজনন বিশেষজ্ঞ ড. জোয়ের্গ আলবার্ট বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য শ্রবণক্ষমতার উপর আঘাত হানা একটি প্রতিশ্রুতিশীল পদ্ধতি হতে পারে। তবে এর আরও গভীর গবেষণা প্রয়োজন।এছাড়াও, মশাবাহিত রোগপ্রবণ এলাকায় বাচ্ছা উৎপাদনে অক্ষম পুরুষ মশা ছেড়ে দেয়ার মত বিকল্প পদ্ধতির কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। তবে এ ধরনের উদ্ভাবন ব্যবহারের ক্ষেত্রে পরিবেশের প্রতি মনোযোগী থাকা জরুরি, কারণ অনেক মশা মাছ, পাখি ও ব্যাঙের খাবার এবং কিছু ক্ষেত্রে পরাগায়নে ভূমিকা রাখে।