তিসি(ইংরেজি:Linseed, বৈজ্ঞানিক নামঃ linum usitatissimum) তেল ও আঁশ উৎপাদনকারী গুল্ম। মিশরে লিনেন জাতীয় বস্ত্র তৈরীতে এর ব্যবহার শুরু হয়। বর্তমানে তেল বীজ ও আঁশ হিসাবে ব্যবহার হয়।

এটি ৩০ থেকে ৮০ সেঃ মিঃ উঁচু হয়। ফুলনীল, সাদা বা হালকা গোলাপী হয়। প্রতিটা ফুলে পাঁচটি করে পাপড়ি থাকে। ভোর বেলা ফুল ফোটে এবং বিকালে ঝড়ে যায়। কাণ্ডের বাকল বা ছাল থেকে আঁশ তৈরি হয়। আশ সংগ্রহের জন্য উদ্ভিদের কাণ্ড পানির নিচে ৭-২১ দিন রেখে আঁশ সংগ্রহ করা হয়। জাগ দেওয়া ও আঁশ সংগ্রহ পাট হতে আঁশ সংগ্রহের মতো। 

তিসি বীজ রক্তচাপ কমায়, খারাপ কোলেস্টেরল কমায়, ধমনীতে কোনও বস্তু জমা হওয়া রোধ করে। এ কারণে এই বীজ পরোক্ষভাবে স্ট্রোক বা হৃদরোগও প্রতিরোধ করে। ক্যানসারের ঝুঁকি কম করে: তিসির বীজে লিগন্যান থাকায় এটি কোলন, প্রসটেট, স্তনের ক্যানসার রোধ করে। এর অ্যান্টি অ্যাঞ্জিওজেনিক উপাদান শরীরে টিউমার হতে বাধা দেয়।

উপাদানসমূহ :

এক টেবিল চামচ তিসিতে থাকে ১ দশমিক ৬ গ্রাম প্রোটিন, দুই গ্রাম কার্বন, ৪ শতাংশ ফসফরাস, ২ শতাংশ পটাশিয়াম, ১৫৯৭ মিলিগ্রাম ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি এসিড, দুই গ্রাম ফাইবার, বিভিন্ন ধরনের তিন গ্রাম ফ্যাট, ২ শতাংশ করে আয়রন ও ক্যালসিয়াম, ৭ শতাংশ ম্যাগনেশিয়াম এবং ক্যালরি আছে ৩৭। এসব উপাদানের নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা রয়েছে।

হৃদরোগ প্রতিরোধে : 

তিসিতে আছে অ্যামাইনো আর ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি এসিড। এটা উচ্চ রক্তচাপ থেকে সুরক্ষা দেবে। নিয়মিত তিসি খাওয়ার অভ্যাস আর্টারির কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখে।

ডায়াবেটিস ও প্রদাহ :

এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি এসিড থাকায় শরীরের নানা রকম প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। এ ছাড়া নিয়মিত তিসি খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়।

ক্যান্সার প্রতিরোধে :

তিসিতে আছে সাইটোকেমিক্যাল, যা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। আর ক্যান্সার চিকিৎসায় এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট দারুণ কার্যকরী।

চুলের যত্নে :

চুলের যত্নে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি এসিড খুবই প্রয়োজনীয় এক উপাদান, যা তিসিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে। তাই নিয়মিত তিসি খেলে চুল ভালো থাকবে।

স্কাল্পের যত্নে : 

নিয়মিত তিসি খেলে খুলির নানা সমস্যা যেমন চুল পড়া, খুশকি আর খুলির একজিমা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। তিসি ত্বকের জন্যও দারুণ এক উপাদান