প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকা লালমনিরহাটে কালীগঞ্জে তিস্তা নদী একটি চরের কৃষকেরা আগাম তরমুজ চাষে সাফল্য পেয়েছেন

প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকা লালমনিরহাটে কালীগঞ্জে তিস্তা নদী একটি চরের কৃষকেরা আগাম তরমুজ চাষে সাফল্য পেয়েছেন। আগাম তরমুজের বাম্পার ফলন ও বিক্রি করে লাভবান হওয়ায় পিছিয়ে পড়া চরের জনপদের কৃষকেরা এখন ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছেন। সরকারের কৃষি বিভাগ বলছে, তাঁরা কৃষকদের পরামর্শ ও সহায়তা দেওয়া অব্যাহত রাখবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লালমনিরহাটে কালীগঞ্জে  উপজেলার ভোটমারি ইউনিয়নের তিস্তা নদীতে জেগে ওঠা চরে এই চরে মূলত ছিন্নমূল ভূমিহীন বাসিন্দারা বাস করেন। এখানকার বাসিন্দাদের কৃষি ও মৎস্য শিকারই জীবিকা নির্বাহের প্রধান অবলম্বন তাদের নেই কারন তিস্তা নদীতে তেমন কোন পানি থাকে না তবে কৃষিতে একটা সফল চরের কৃষকেরা।
‘শুষ্ক মৌসুমে সাধারণত চর প্লাবিত হয় না। কিন্তু এ মৌসুমে ধানের আবাদও সম্ভব না। তা কী আবাদ করা যায়, ভাবতে থাকি। কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়নের জামির বাড়ির চর এলাকা তরমুজ চাষের জন্য বিখ্যাত। ওই এলাকার নিকটাত্মীয় কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ হয়। তাঁরা আগাম তরমুজ চাষের পরামর্শ দেন। কালীগঞ্জ কৃষি অফিস থেকে বীজ  নিয়ে এ বছরে  শীত মৌসুমের শেষের  দিকে আমরা কয়েকজন মিলে ১ একর জমিতে আগাম তরমুজের আবাদ শুরু করি। এতে খরচা হয় ১৫ হাজার টাকা। কিন্তু বিক্রি করি ৬০ হাজার  টাকার তরমুজ।’ এজার আলী বলেন এই তরমুজ চাষের প্রধান উদ্যোক্তা। তিনি বলেন, আমাদের গত বছরের সফলতায় উদ্বুদ্ধ এলাকার কৃষকেরা এ বছর বছর শীতের শেষের দিকে ব্যাপক হারে আগাম তরমুজের আবাদ শুরু করেন। এই চরে এবার মোট ২ একর জমিতে তরমুজ আবাদ হয়েছে।
এলাকার তরমুজ চাষি রাকিব মিয়া জানান, তাঁরা গত বছর এইখানে আগাম তরমুজের ভালো আবাদ দেখে এ বছর তরমুজ চাষ শুরু করেন। এক একর জমিতে আবাদ করতে খরচা হয়েছিল ১৫ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকার বিক্রি করেছেন। আশা করেন আরও ৫০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন।
গরমের  শুরুতেই বাজারে উঠতে শুরু করেছে তরমুজ। কালীগঞ্জে  হাটে-বাজারে ভ্যানগাড়িতে ফেরি করেও প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে এসব তরমুজ। তরমুজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে এসব তরমুজের ব্যাপক চাহিদা। ক্রেতারা বেশি দাম দিয়েও কিনে নিচ্ছেন।
তরমুজ ব্যবসায়ী রবিউল  ইসলাম বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছি। আগাম তরমুজের বাজারে বেশ চাহিদা রয়েছে।
কালীগঞ্জ  উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার কান্তি বলেন, ‘চরে বেলে দোঁয়াশ মাটি তরমুজ চাষের জন্য খুবই ভালো। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে পরামর্শ ও সহায়তায় দিয়েছি। আগাম তরমুজের ভালো ফলন হয়েছে। পাকিজা জাতের তরমুজ আগাম আবাদ করেছেন জামির বাড়ীর চরের কৃষকেরা।  আরও বেশি তরমুজের আবাদ সম্ভব।