মিরাজুল ইসলামের আর্থিক সহযোগিতায় মঞ্জু দূতাবাসের মাধ্যমে শামীমকে দ্রুত দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করছেন। ভুক্তভোগী শামীম বলেন আগামী ৭ দিনের মধ্যে দেশে আসতে পারব আশা করছি।

মোহাম্মদ শামীম হোসেন (৩০) জীবন-জীবিকার তাগিদে পাড়ি জমিয়েছিলেন আভিজাত্যের শহর দুবাইয়ে। ঋণ নিয়ে দুবাই গিয়ে দালালের খপ্পরে পড়ে তাকে সইতে হয়েছে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। ভিডিও বার্তায় বাঁচার আকুতি জানিয়ে অবেশেষে উদ্ধার হয়েছেন শামীম। দ্রুত দেশে ফিরবেন বলে আশাবাদী তার পরিবার। ভুক্তভোগী শামিমের পরিবার সূত্রে জানা যায়, জেলার ভাণ্ডারিয়া পৌরসভার কানুয়া এলাকার আব্দুল কাদের হাওলাদারের ছেলে দুলাল হাওলাদার গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তিন লাখ টাকার বিনিময়ে একই উপজেলার নদমূলা ইউনিয়নের দারুলহুদা গ্রামের আব্দুল হাই সরদারের ছেলে শামীম হোসেনকে উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে দুবাই নিয়ে যান। কিন্তু শামীম দুবাই পৌঁছানোর পর পাল্টে যায় দালাল দুলালের আচরণ।

তিনি শামীমের থেকে তার পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেন, নিয়ে যান অজ্ঞাত স্থানে এবং আরও আড়াই লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে না পারায় শামীমেম উপর চলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। দুবাইয়ে থাকা প্রায় তিন মাস হয়ে গেলেও সেই দুলাল হাওলাদার শামীমের কোনো চাকরির সন্ধান দেয়নি। এক পর্যায়ে ওই বন্দিদশা থেকে পালিয়ে দুবাইয়ে অবস্থানরত ভাণ্ডারিয়া এলাকার পরিচিত লোকের কাছে গিয়ে আশ্রয় নেন শামীম। এ অবস্থায় এক ভিডিও বার্তায় পিরোজপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মহারাজ ও ভাণ্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলামের কাছে তাকে বাঁচানোর আকুতি জানান তিনি। এরপরই বিষয়টি নজরে আসায় তারা ব্যবস্থা নেন। ভিডিও বার্তায় শামীম জানান, মা-বাবার স্বপ্ন পূরণের জন্য গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তিন লাখ টাকা ঋণ করে দালালের মাধ্যমে দুবাই আসেন কাজের সন্ধানে। কিন্তু দুবাই পৌঁছানোর পর দালাল মারধর করে তার পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেয় এবং দুবাইয়ের একটি অজ্ঞাত স্থানে একটি কক্ষে রেখে যায়।

তিন মাস হয়ে গেলেও দুলাল হাওলাদার তাকে কোনো চাকরির সন্ধান দেয়নি। মোবাইলে ফোন করলেও দুলাল রিসিভ করে না। উদ্ধার হওয়ার পর শামীম বলেন, মহিউদ্দিন মহারাজ ও মিরাজুল ইসলাম মিরাজ জানতে পেরে তাৎক্ষণিক উদ্ধারের জন্য দুবাইয়ে থাকা তার পরিচিত ভাই মঞ্জুকে নির্দেশ দেন। তিনি মোবাইলে যোগাযোগ করে শামীমকে উদ্ধার করে নিয়ে একটি হোটেলে রাখেন। মিরাজুল ইসলামের আর্থিক সহযোগিতায় মঞ্জু দূতাবাসের মাধ্যমে শামীমকে দ্রুত দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করছেন। ভুক্তভোগী শামীম বলেন আগামী ৭ দিনের মধ্যে দেশে আসতে পারব আশা করছি।

 উদ্ধার হওয়ার পর ভুক্তভোগী শামীম মহিউদ্দিন মহারাজ ও মিরাজুল ইসলাম মিরাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আরেকটি ভিডিও বার্তা দেন। সেখানে তিনি বলেন, আমাকে উদ্ধার করা হয়েছে। আমি এখন ভালো আছি। আশা করছি দ্রুত সময়ে দেশে পরিবারের কাছে ফিরতে পারব। আমি বাংলাদেশে ফিরে এসে দালাল দুলালের বিরুদ্ধে আইনের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এ বিষয়ে ভান্ডারিয়া থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশিকুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।