দক্ষিণ বাংলার প্রবেশ দ্বার খ্যাত ছিলো দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌরুট। পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচলা শুরু হলে দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌরুট তার জৌলুশ হারিয়ে ফেলে। কিন্তু কমেনি ব্যস্ততা। এখন ও প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ী পারাপার হয় এই নৌরুট দিয়ে। তাছাড়া হাজার হাজার যাত্রী পারাপার হয় লঞ্চ যোগে। রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জ জেলার পাটুরিয়া নৌরুটের ফেরি-লঞ্চ সহ সকল প্রকার নৌযান চলাচল সচল রাখতে দৌলতদিয়া ৭নং ফেরি ঘাটে ড্রেজিং শুরু করেছে বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডবিউটিএ)। এই নৌরুটের দৌলতদিয়া পারের ৭নং ফেরি ঘাটের ডাউন পকেটে ড্রেজার দিয়ে ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে ৭নং ফেরি ঘাটের একটি পকেট বন্ধ রেখেছে বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডবিউটিএ)। নৌবাহিনীর প্রজেক্ট অফিসার আব্দুল মান্নান জানান, বিআইডাব্টিলিউটিএ এর কনসালটেড দিয়ে সার্ভে করা হয়েছে। তাদের নির্দেশনায় গত রবিবার থেকে লঞ্চ-ফেরি সহ সকল প্রকার নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ড্রেজিং শুরু করা হয়েছে। তবে কতদিন পর্যন্ত ড্রেজিং করা লাগবে সেটা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তিনি আরোও বলেন, ঘাট গুলো সচল রাখতে পূর্ব প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে। বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডবিউটিএ) এর প্রকৌশলী আবু জাহিদ তুহিন জানান, গত কয়েক দিন যাবৎ রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া এবং মানিকগঞ্জ জেলার পাটুরিয়া নৌরুটে সার্ভে করা হয়েছে। এ পর্যায় দৌলতদিয়া ৭নং ফেরি ঘাটে নাব্যতা সংকট দেখা দেওয়ায় ড্রেজিং শুরু করা হয়েছে। পরবর্তীতে পানি কমে আসলে ড্রেজারের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে। ফেরি ও লঞ্চ ঘাট সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দৌলতদিয়া পারে ৭টি ফেরি ঘাট এবং ১টি লঞ্চ ঘাট রয়েছে। এর মধ্যে ৩, ৪ ও ৭নং ফেরি ঘাট সচল রয়েছে। অন্য ঘাট গুলো দীর্ঘদিন যাবৎ অকেজো অবস্থায় পরে আছে। এর মধ্যে ৩ ও ৪ নং ফেরি ঘাটের মাত্র একটি পকেট রয়েছে। ৭নং ফেরি ঘাটের ৩টি পকেট রয়েছে। অর্থাৎ এক সাথে ৩টি ফেরি নোঙ্গর করা সম্ভব। তবে নাব্যতা সংকটের কারণে ৭নং ফেরি ঘাটের একটি পকেট বন্ধ রয়েছে। ড্রেজিং সংস্থার প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, ০৭ নং ঘাটটি সচল করতে আরও ৬/৭ দিন সময় লাগবে। এদিকে পাটুরিয়া পারে ঘাট গুলো সচল রাখার জন্য সার্ভে করা হচ্ছে। ফেরি ঘাট গুলো সচল রাখতে পূর্ব প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিআইডবিøউটিএ কর্তৃপক্ষ। তবে ঘাট পারে ব্যবসায়ী ও বসবাসকারীরা বলেন, নদীর পানি দ্রুত কমে আসছে। নদীর পানি কমে আসার কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে অসংখ্য ডুবোচর দেখা দিচ্ছে। ঘাট পারে এবং নৌরুটে ডুবোচর থাকায় নৌযান স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের ম্যানেজার মো. নুরুল আনোয়ার মিলন বলেন, নদীর পানি কমে যাচ্চে। তবে যে ভাবে পানি কমিয়ে আসছে এতে কিছুদিনের মধ্যে নৌযান চলাচলে সমস্যা হবে। সুতরাং পূর্ব প্রন্তুতি না রাখলে নৌযান চলাচলে অসুবিধা হবে। তিনি বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ৩৩টি লঞ্চ পর্যাক্রমে চলাচল করে। বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডবিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ১৩টি ছোট বড় ফেরি চলাচল করছে। তবে দৌলতদিয়া পারে ৭টি ফেরি ঘাট রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৩টি ঘাট সচল রয়েছে। ১, ২, ৫ নং ফেরি ঘাট দীর্ঘদিন যাবৎ অকেজো হয়ে পরে রয়েছে। ৬ নং ফেরী ঘাটটি সচল করা হয়েছে।