ঢাকার ধামরাইয়ের জয়পুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন সেপটিক ট্যাংকে পড়ে আয়ান নামের সাড়ে ৩ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। স্বজনদের দাবি সেপটিক ট্যাংকি নির্মাণের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অসতর্কতার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে।
নিহত আয়ান সোমভাগ ইউনিয়নের দক্ষিণ জয়পুরা এলাকার জামান মোল্লার ও আখি আক্তারের একমাত্র ছেলে।
আজ সোমবার (৭ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে খেলতে গিয়ে উপজেলার জয়পুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সেপটিক ট্যাংকে পড়ে যায়। পরে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
একমাত্র সন্তান আয়ানকে হারিয়ে পাগল প্রায় মা-বাবা। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গাফিলতির কারনে নির্মাণাধীন সেপটিক ট্যাঙ্কটি খোলা রয়েছে এবং একারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, বিদ্যালয়ের সেফটি ট্যাঙ্কটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে। তবে প্রাথমিক টেন্ডার বাতিল হয়ে পুনরায় নতুন টেন্ডার ডাকা হয়। চলতি বছরের ৪ এপ্রিল নতুন করে কাজ শুরু করে "আল জোবায়ের কনস্ট্রাকশন" নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
শিশু আয়ানের পিতা জামান মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, আজ সকাল ১২টার দিকে আমার ছেলে খেলতে গিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন সেপটিক ট্যাংকিতে পড়ে যায়। সেখান থেকে উঠতে পারেনি। আমরা অনেক খুঁজাখুঁজি করার পর বেলা ১ টার দিকে বিদ্যালয়ের সেপটিক ট্যাংকে গিয়ে দেখি আমার ছেলের নিথর দেহ। পরে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নিলে ডাক্তার আমার ছেলেকে মৃত ঘোষণা করে।
এঘটনায় নিহত আয়ানের মামা রউফ বলেন, এমন অরক্ষিত স্থানে যে কোন শিশু বিপদে পড়তে পারে। আজ আমার ছোট্ট ভাগ্নে মারা গেলো। ঠিকাদার ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির শাস্তি দাবি করেন তিনি।
এবিষয়ে দক্ষিণ জয়পুরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বিদ্যালয়ের সেপটিক ট্যাংকির কাজ নির্মাণাধীন থাকায় সেপটিক ট্যাংকে বৃষ্টির পানি জমে ছিলো। আর সেই পানিতে পড়ে শিশুটি মারা যায়। কাজ চলমান আছে, সকালেও ঠিকাদার আসছিলো কাজ দেখে চলে গেছে। বাচ্চাদের নিয়ে আপনার প্রতিষ্ঠান আর এখানে অরক্ষিত একটা ট্যাংক এটা আপনারা ঢেকে রাখবেন না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের তো আর সবসময় এটা দেখে রাখা সম্ভব না।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আল জোবায়ের কনস্ট্রাকশনের মালিক বাদল হোসাইনকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।