ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা তীরবর্তী লঞ্চঘাট এলাকায় উন্মুক্ত স্থানে ফেলা হচেছ ময়লা আবর্জনা। সরোজমিন ঘুরে দেখা যায় নদীর তীরবর্তী অংশে ময়লা আবর্জনা স্তুপ করে রাখা হয়েছে। তীব্র গন্ধে স্থানীয়রা নাকাল হয়ে ওই এলাকা এড়িয়ে অন্যত্র দিয়ে চলাচল করছেন।তবে এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরাজ করছে ক্ষোভ। তারা নলছিটি পৌর কতৃপক্ষকে সেখানে ময়লা না ফেলার জন্য একাধিকবার অনুরোধ করেছেন। তবে তাদের অনুরোধ উপক্ষো করে বছরের পর বছর সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। নলছিটি পৌর এলাকায় ময়লা আবর্জনা ফেলার কোন সুনির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় সারা শহর থেকে সংগ্রহ করা ময়লা আবর্জনা পৌরসভার পরিছন্নতা কর্মীরা সেখানে ফেলে আসেন। ফলে পরিবেশ দূষনসহ নদীর পানিও দূষিত হচ্ছে। নদীর তীরবর্তী মানুষজন আক্রান্ত হচেছ নানান পানিবাহিত রোগে।স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহাদাত আলম জানান, লঞ্চঘাট সংলগ্ন বাজারেই আমাদের পাইকারী চালের দোকান। আমি অনেক বছর ধরে এখানে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। এখানে সাপ্তাহিক বাজারের দিন বিপুলসংখ্যক ক্রেতা বিক্রেতার সমাগম ঘটে। কিন্তু আমাদের বাজার থেকে একটু দূরেই নদীর তীরে পৌর এলাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করা ময়লা ফেলা হচ্ছে। এখানে গন্ধে অনেক সময় দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। আমাদের দাবি যতদ্রুত সম্ভব নলছিটিতে একটি ডাম্পিং ষ্টেশন করা হোক। তাতে পরিবেশও ভালো থাকবে অমাদেরও এসব সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না।
তিনি আরও বলেন, নলছিটি বন্দরটি নদীমাতৃক হওয়ায় দূর দূরান্ত থেকে অনেক ব্যবসায়ী নৌকায় করে এখানে তাদের মালামাল বিক্রি করতে আসেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে কৃষকরাও তাদের উৎপাদিত পন্য নৌকায় করে নিয়ে আসেন। তাদের নৌকা নোঙর করার ঠিক পাশেই ময়লা আবর্জনার স্তুপ যা তাদের জন্য সবদিক দিয়েই নানান সমস্যার সৃষ্টি করছে। এর ভিতর অনেকে দূরদূরান্ত থেকে সাপ্তাহিক বাজারের আগের দিন রাতে এসে এখানে নৌকায়ই রাত্রি যাপন করেন। তাদের জন্য নদীর পানি খুবই গুরুত্বপূর্ন। এছাড়া বাজারের পাশেই একটি মসজিদ আছে। অনেক সময় বিদুৎ সমস্য দেখা দিলে মুসল্লীদের নদীর পানি ব্যবহার করতে হয়। এই মসজিদে প্রায় সময় তাবলিগ জামাতের মুসল্লীরা অবস্থান করেন তাদের নদীতে গোসলসহ অন্যান্য কাজ করতেও অসুবিধা হয়। এসব বিষয়কে মূল্যায়ন করে এর আশু সমাধান করা উচিত।স্থানীয় বাসিন্দা খন্দকার জাহিদুল ইসলাম জানান, এখানে ময়লা ফেলা কারনে যারা নদীর পানি ব্যবহার করতেন তারা নদীর পানি দূষিত হওয়ায় তা ব্যবহার করতে পারছেন না। অনেকেই আবার নানান পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আবার দেখা যায় বন্যার সময় এই ময়লা আবর্জনা বন্যার পানির সাথে লোকালয়ে প্রবেশ করে। যাতে স্থানীয়রা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আবার পরিবেশও দূষিত হচ্ছে। এখানে অনেক পরিবার আছে যারা নদীর পানির উপর নির্ভরশীল যারা নিত্য প্রয়োজনীয় কাজের জন্য নদীর পানি ব্যবহার করে থাকেন তারাও এখন বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। কিছু লোক নিম্ন আয়ের হওয়ায় বাধ্য হয়ে এসব পানি ব্যবহার করছেন। তাদের এছাড়া কোন উপায়ও নেই। আবার তারা আর্থিকভাবে দূর্বল হওয়ায় বাসস্থান পরিবর্তনও করতে পারছেন। এসব বিবেচনায় রেখে পৌর কতৃপক্ষের উচিত এখানে ময়লা না ফেলে আধুনিক কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করা। সেটা না পারলে আবাসিক এলাকা থেকে দূরে কোথাও মাটি খুড়ে গর্ত করে তার ভিতর ময়লা ফেলার ব্যবস্থা করা উচিত বলে আমি মনে করি। আমরা অতিদ্রুত সেটাই দেখতে চাই।এ ব্যাপারে নলছিটি পৌরসভা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। যেহেতু এখন জানেত পেরেছি তাই যতদ্রুত সম্ভব এর ভালো একটা সমাধান খুজে বের করার চেষ্টা করা হবে।