রবিবার ২০ নভেম্বর সকালে সংগঠিত এই অবরোধে মোগড়াপাড়া - বৈদ্যেরবাজার সড়কে ১ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। সোনারগাঁ থানা পুলিশের অফিসার (তদন্ত) জনাব আহসানের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যদের একটি প্রতিনিধিদল ঘটনস্থলে এসে দখলকৃত জায়গাগুলো পরিদর্শন করেন এবং এলাকাবাসীকে দখলমুক্তির আশ্বাস প্রদানের পর জনসাধারণ অবরোধ তুলে নেয়। এলাকাবাসী কর্তৃক থানায় দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ভাটিবন্দর জিয়ানগর - সাহাপুরে মারিখালি নদীর উপর সংযোগ ব্রীজ নির্মাণ করার পর থেকেই উভয় পাশে নদীর পাড় দখল করে বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠা শুরু করে, সেসব প্রতিষ্ঠানের মালামাল সব তীরবর্তী নিচে রেখে দেওয়ায় নৌযান চলাচল এবং পার্শ্ববর্তী ঘাটে গোসল করতে ব্যঘাত সৃষ্টি হয়।
সাম্প্রতিক স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যবসায়ী মৃত আঃ খালেক ব্যাপারীর ছেলে শহীদুল ইসলাম (৪০) ব্রীজের নিচে নদীর অর্ধেক অংশে বড় দেয়াল তুলে বালি ভরাট করে দখলে নিয়ে এবং নদী তীরের আশেপাশে পিলার উঠিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে ও অবৈধভাবে মাসে ১ লক্ষ টাকার বেশি ভাড়া উত্তেলন করতে থাকে। ব্রীজ সংলগ্ন সরকারি ঘাটে স্থানীয় জনসাধারণ বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন নিওমিত গোসল করে, অভিযুক্ত শহীদ এই ঘাট ও আশেপাশের নদীর পাড় তার নিজের বলে দাবী করে তার পাশে ইটবালি ফালায়। এলাকাবাসী অভিযোগ করলে অভিযুক্ত শহীদ ঘাট ব্যবহারকার হুমকি প্রদান করে এবং পুনরায় আরোও ইটবালি ফেলে দখল বাড়াতে থাকে। এলাকাবাসী সূত্রে প্রাপ্ত, স্থানীয় প্রায় দুই শতাধিক জনগণের স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র থানা কর্তৃপক্ষের কাছে জমা করার পরেও অভিযুক্ত শহীদ দখল আরো বাড়াতে থাকলে একালাবাসী রবিবার সকালে নদী দখলমুক্ত করা ও নির্বিঘ্নে পরিচ্ছন্নভাবে সরকারি ঘাট ব্যবহারের দাবীতে মানববন্ধন করে সড়ক অবরোধ করে।
স্থানীয় ষাটোর্ধ সুভাস দাস বলেন, নারায়ণগঞ্জ - ৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা সর্বসাধারণের জন্য সরকারি এই ঘাটটি করে দেন, হিন্দু-মুসলিম নরীদের কাপড় পরিবর্তনের জন্য ঘাট সংলগ্ন গোসলখানাও করে দেন। কিন্তু স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বর্জ্য আর সরঞ্জাম নদীর পাড়ে পরে থাকে বিধায় নদী দূষিত হচ্ছে আর গোসলের জায়গাও সংকুচিত হয়ে আসছে। এর মধ্যেই স্থানীয় ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম নদীর অর্ধেক তার নিজের জায়গা বলে দাবী করে ব্রীজের নিচে দেয়াল তুলে বালি ভরাট করে অর্ধেক নদী নিজের দখলে নিয়ে নেয় আর ব্রীজের পাশের পাড় ভড়াট করে বিভিন্ন দোকানপাট গড়ে তোলে, সেখানে রাতে জুয়ার আসরও বসায়, এমনকি বিস্তীর্ণ নদীর পাড় নিজের বলে দাবী করে সেখানে পিলার বসিয়ে দখল করে নিয়ে কাঠ ব্যবসায়ীদের জায়গা ভাড়া দেয়। ফলে নদীতে নৌযান চলতে পারে না আর সব নৌকাকে গোসলের ঘাটেই ভিড়তে হয়, তাই আমাদের গোসল করতেও অসুবিধা হয়।
আমাদের দাবী একটাই পুরো মারীখালি নদী দিন দিন সবজায়গায় দখল হয়ে যাচ্ছে, আমরা ছোটকাল থেকে এই নদীকেন্দ্রীকই চলাফেরা করে আসছি, এই নদী আর নদীরপাড় সব নিরীক্ষন করে দখলমুক্ত করতে হবে, আমাদের মৃতপ্রায় এই মারীখালি নদীর জায়গা উদ্ধার করে নির্বিঘ্নে পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করে জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য সহজ করে দিতে হবে এবং স্থানীয় শহীদের অবৈধ দখলে থাকা নদীর পাড়ের সব স্থাপনা উচ্ছেদ করে আমাদের গোসলের ঘাট ও আশেপাশের নদীর পাড় পূর্ণ ব্যবহারের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ মাহাবুব আলম এবং সহকারী ভূমি অফিসার জনাব ইব্রাহীম অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।