নরসিংদী সদর উপজেলার আলগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শারমিন রেজোয়ানাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ।
গত ৯ এপ্রিল (মঙ্গলবার) জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নিরঞ্জন কুমার রায়ের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা-২০১৯ এর একাধিক ধারা লঙ্ঘন করে শিক্ষিকা শারমিন রেজোয়ানা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ এবং মানহানিকর মন্তব্য করেছেন। যা একজন সরকারি কর্মচারীর জন্য চরম অসদাচরণ হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়।
পরবর্তীতে সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ এর ৩৯(১) ধারা অনুযায়ী তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা পাবেন বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়।
তবে এ ঘটনায় শুধু অশ্লীল মন্তব্যই নয়, শারমিন রেজোয়ানার বিরুদ্ধে রয়েছে আরও গুরুতর অভিযোগ। স্থানীয় সূত্র ও একাধিক ভুক্তভোগীর দাবি, তিনি দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক, রাজনৈতিক ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীদের ব্ল্যাকমেইল করে আসছিলেন।
প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্মানহানিকর পোস্ট, এরপর নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, অন্তত ৮-৯ জন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা আদায় করেছেন তিনি। তবে সম্মানহানির ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে অভিযোগ করতে সাহস পাচ্ছেন না।
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে শারমিন রেজোয়ানার একাধিক অশ্লীল ভিডিও ও ভয়েস রেকর্ড ছড়িয়ে পড়লে জনমনে চরম ক্ষোভ ও চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
শিক্ষক সমাজের অনেকেই এই ঘটনাকে শিক্ষকতার মর্যাদার চরম অবক্ষয় হিসেবে দেখছেন। কেউ কেউ বলছেন— বর্তমান সমাজে ব্যক্তিস্বাধীনতা ও নৈতিকতার ভারসাম্য রক্ষা করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নিরঞ্জন কুমার রায়ের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।