মহানগরী খুলনাসহ সারাদেশে দুই দিনব্যাপী বিদ্যারদেবী শ্রী শ্রী সরস্বতী পূজা উদযাপিত হয়েছে। গত রোববার পঞ্চমী শুরুর সঙ্গে সঙ্গে পূজা শুরু হয় এবং গতকাল সোমবার পঞ্চমী তিথি থাকা পর্যন্ত পূজা অনুষ্ঠান চলে। অনুষ্ঠান সূচির মধ্যে ছিল মন্দিরে প্রতিমা ও ঘট স্থাপন, সরস্বতী মায়ের পূজা, অঞ্জলি প্রদান ও উপস্থিত ভক্তবৃন্দের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ। মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে তিনি বিশেষরূপে পূজিত হন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা মেডিকেল কলেজ, বিএল কলেজসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সারাদেশ ব্যাপী একযোগে এ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। খুলনা মেডিকেল কলেজ এ উপলক্ষে ‘অক্ষরা’ নামে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করেছে। নগরীর বিভিন্ন মন্দিরেও ছিল অনুরূপ আয়োজন। সরস্বতী বিদ্যার দেবী। শিক্ষার্থীরা বিদ্যা ও জ্ঞান অর্জনের জন্য এ পূজা করে থাকেন। সরস্বতীর অপর নাম বীণাপানি। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই পূজা হয়ে থাকে। ছাত্র-ছাত্রীরাই মূলতঃ এই পূজার আয়োজক। তবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এই পূজার সাথে সম্পৃক্ত তাই অনেক জায়গায় যেমন ক্লাবে, মহল্লায় বা পাড়ায়, গ্রামে, বাজারে, এমনকি ব্যক্তিগত ভাবে বাড়িতে ঘটা করে সরস্বতী পূজা আয়োজন করে। গতকাল নগরীর শীতলা ঠাকুরানী মন্দিরের প্রধান পুরোহিত রনজিত মুখোপাধ্যায় শ্রী শ্রী সরস্বতি মায়ের পূজা করেন এবং ভক্তবৃন্দদের অঞ্জলি প্রদান করান। এ সময় মন্দিরে ভক্তবৃন্দের উপচে পড়া ভীড় পরিলক্ষিত হয়। উপস্থিত ছিলেন শ্রী শ্রী শীতলাবাড়ী কার্যকরী সংসদের সভাপতি সুজিত কুমার সাহা, সহ-সভাপতি অরবিন্দ সাহা, অমর দাস, এড. পঙ্কজ সাহা, দীনেশ চন্দ্র দাস, প্রকৌশলী অশোক দাস, সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার ঘোষ, বিপ্লব কুমার দাস, অভিজিৎ কুমার দাসসহ মন্দির কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এছাড়া নগরীর ধর্মসভা আর্য মন্দিরেও পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এখানে প্রচুর ভক্তবৃন্দের সমাগম ঘটে। নগরীর অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন সরকারি বিএল কলেজ, সরকারি আযম খান কমার্স কলেজ, সরকারী এম এম সিটি কলেজ, সরকারি সুন্দরবন কলেজ, সরকারি পাইনিয়ার মহিলা কলেজ, পাবলিক কলেজ, খুলনা পলিটেকনিক কলেজ, খুলনা জিলা স্কুল, সরকারি করোনেশন গার্লস স্কুল, সেন্ট যোসেফ স্কুল, সরকারি ইকবাল নগর বালিকা বিদ্যালয়, বিকে ইউনিয়ন স্কুল, সরকারি মডেল স্কুলসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।নগরীর বড়বাজার সত্যনারায়ণ মন্দির, আদি কালীবাড়ি পাড়া সার্বজনীন পূজা মন্ডপসহ বড় বাজার পূজা, ধর্মসভা মন্দির, শিববাড়ি মন্দির, দোলখোলা ম্যাচের তরুণ সংঘ, বাণীশ্রী সংঘসহ কয়েকটি মন্দিরে এ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। মহানগরী ছাড়াও গ্রামের পাড়ায় পাড়ায় এ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় সকল মন্দিরে আরতি অনুষ্ঠান হয়। আরতির পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বার মাসে তের পূজার অন্যতম হলো বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা।