গতকাল সোমবার মধ্যে রাতে তাদের নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

সাগর পাড়ি দিয়ে লিবিয়া থেকে ইতালির নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়ে লিবিয়া নিয়ে নির্যাতন করে মুক্তিপণ দাবি করা মানব পাচারকারী চক্রের ৪ দালালকে গ্রেফতার করেছে ভৈরব থানা পুলিশ। এর মধ্যে দুজন নারী সদস্য রয়েছেন। গতকাল সোমবার মধ্যে রাতে তাদের নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো, ভৈরব উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের জামালপুর মাইজহাটি এলাকার কালু মিয়া, মোরাদ মিয়া, জনুফা বেগম ও অনুফা বেগম। মামলা সূত্রে জানাযায়, কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার আয়ুব আলী তার ছেলে কবির মিয়াকে ইতালি পাঠানোর উদ্দেশ্যে লিবিয়ায় বসবাসরত ফারুক মিয়ার স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করেন। পরে স্বজনদের মাধ্যমে ফারুক মিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হলে ফারুক জানায়, তার ছেলে কবিরকে সরকারি ভাবে প্রথমে লিবিয়া নিতে হবে এবং সেখান থেকে ইতালিতে পাঠাতে খরচ পড়বে ১০ লাখ ৫০হাজার টাকা।

ফারুক ও  তার স্বজন কথামতো ভুক্তভোগী আয়ুব আলী তার জমি বিক্রি করে ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২ সালে কয়েকজন লোকের সামনে শহিদা আক্তারের কাছে ১০লাখ টাকা ও ছেলের পাসপোর্ট জমা দেন। টাকা দেয়ার কিছুদিন পর বিদেশগামী কবিরকে লিবিয়া নেয়া হয়। লিবিয়া যাওয়ার পর সেখানে ফারুক মিয়া তার বাসায় আটকে রেখে আরো টাকা দেয়ার জন্য নির্যাতন শুরু করে। এসব নির্যাতনের দৃশ্য দেখিয়ে এবং ছেলের সাথে মোবাইলে কথা বলিয়ে আরও ২০লাখ টাকা দাবি করা হয়। নয়ত তার ছেলেকে ইতালি না পাঠিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। ছেলের জীবন বাঁচাতে নিজ বসতঘর বিক্রি ও ধারদেনা করে দালালের দাবিকৃত ২০লাখ টাকা ১৩ অক্টোবর ২০২২তারিখে মামলার ৪নং অভিযুক্ত আসামি অনুফা বেগমের কাছে পরিশোধ করেন। ওই সময় অনুফা বেগম টাকা হাতে পেয়ে ফারুককে সাথে লিবিয়ায় যোগাযোগ করে আয়ুব আলীকে জানান ১ সপ্তাহের মধ্যে ছেলে কবিরকে ইতালি পাঠানো হবে।

কিন্তু তারা ইতালি না পাঠিয়ে নানান তালবাহানা করেন এবং লিবিয়ায় আটককৃত কবিরকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতে থাকলে তা সহ্য করতে না পেড়ে ফারুক মিয়ার বাসা থেকে পালিয়ে যায়। পরে চাপাইনবাবগঞ্জের আব্দুল্লাহ নামের একজনের মাধ্যমে পুনরায় ৪ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ইতালীতে পৌঁছে। এঘটনায় মামলা দায়ের করা হয় অভিযুক্ত ৩ নারীসহ ৬জনের বিরুদ্ধে। ওই মামলায় ভৈরব থানা পুলিশ দুই নারীসহ চারজনকে গ্রেফতার করে গতকাল সোমবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেল হাজতে প্রেরণ করেন। মামলার বাদী আয়ুব আলী সাংবাদিকদের বলেন, আমার ছেলে কবিরকে নির্যাতন করায় এবং মিথ্যা প্ররোচনা দিয়ে আমার কাছ দুই তরফে ৩০লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে ওই দালালরা। এ ঘটনার বিচার চেয়ে ৬জনের নাম উল্লেখ্য করে এবং অজ্ঞাত ২/৩জনকে অভিযুক্ত করে ভৈরব থানায় মামলা দায়ের করি।