জমে উঠেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। দূরদূরান্ত থেকে প্রতিদিনই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আসছেন মেলায়। শুরুতে মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থী কম হলেও দিন যত যাচ্ছে লোকসমাগম ততই বাড়ছে। কেনাকাটার পাশাপাশি অনেকে মেলায় এসে বিনোদনও পাচ্ছেন। এছাড়া প্রকারভেদে বিভ্ন্নি পণ্যে মূল্যছাড় দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা, এতে আগের তুলনায় বেড়েছে বেচাকেনা। তবে, মেলায় নারী ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। তাদের ভিড়ে মুখরিত বাণিজ্যমেলা।

মেলার ১৭তম দিন মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, ক্রেতা-দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর পুরো মেলা প্রাঙ্গণ। গত কয়েকদিন সরকারি ছুটির দিনে মেলা জমজমাট হলেও সপ্তাহের অন্যান্য সময় দর্শনার্থীর উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কম। মঙ্গলবার সকালে ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতি তেমন দেখা না গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আগমন বাড়ে। দুপুরের দিকে ক্রেতা-দর্শনার্থীর পদচারণায় জমজমাট হয়ে ওঠে মেলার প্রতিটি স্টল ও প্যাভিলিয়ন। ব্যবসায়ীরা বিভ্ন্নি পণ্যে মূল্যছাড় দেওয়া বেড়েছে বেচাকেনাও। অন্যদিকে, ব্যবসায়ীরা ক্রেতা আকর্ষণে বিভিন্ন পণ্যে বিশেষ মূল্যছাড় দিতে শুরু করেছেন। ফলে বেড়েছে বেচাকেনা ও দর্শনার্থীর উপস্থিতি। দোকানে দোকানে চলছে দরদাম, ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাক। এভাবে ক্রেতা-দর্শনার্থী এলে প্রত্যাশা পূরণ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মেলার ইজারাদার ও আয়োজকেরা।

বাণিজ্যমেলায় এবারে সবচেয়ে বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ করছে কসমেটিকস, সিটি গোল্ডের (ইমিটেশন) গহনা, শাড়ি, থ্রি-পিস ও জুতার স্টলগুলো। এসব স্টলে নারী ক্রেতার ভিড় বেশি। মেলায় এসেছে বাহারি রঙের বিভিন্ন দেশীয় শাড়ি, থ্রি-পিস, কসমেটিকস ও ইমিটেশনের গহনা। মেলা থেকে গৃহস্থালি পণ্য কিনেছেন শাহিনা আক্তার। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আমার বাড়ি মেলার পার্শ্ববর্তী এলাকায়। গত কয়দিনে তিনবার এসেছি মেলায়। তখন পণ্যে তেমন ছাড় না পাওয়ায় কেনাকাটা করিনি। আজ স্টলগুলোতে কম-বেশি মূল্যছাড় দেওয়া গৃহস্থালি পণ্য কিনলাম। গৃহস্থালি পণ্য বিক্রেতা সামিউল ইসলাম জানান, এবারের মেলায় প্রথমদিকে সরকারি ছুটির দিনগুলোতে আশানুরূপ বেচা-বিক্রি হয়নি। এরই মধ্যে মেলার অর্ধেক সময় চলে গেছে।

তবে, গত কয়েকদিন থেকে মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীর সঙ্গে বেড়েছে বিক্রিও। লোকসমাগম বাড়ায় বেড়েছে বেচাকেনাও। মেলা থেকে ইমিটেশনের গহনা কিনেছেন তাসমিয়া তাসমিন। তিনি বলেন, আমি ডেমরা থেকে এসেছি। পরিবারে জন্য কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় কসমেটিকস ও ইমিটেশনের গহনা কিনছি। বাণিজ্যমেলায় বিভিন্ন দেশের কসমেটিকস, ইমিটেশনের গহনা পাওয়া যায়, তাই এখানে আসা। প্রিয়া টেক্সটাইল স্টলে প্রোপাইটার জালাল আহম্মেদ বলেন, ‘আজকে অন্যান্য দিনের তুলনায় ক্রেতা-দর্শনার্থী সমাগম বেশি। আমরা বিভিন্ন পণ্যে মূল্যছাড় দিচ্ছি। আশা করছি, আগের তুলনায় বেচাকেনা বাড়বে।’ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, দুপুরের পর থেকে মেলায় ক্রেতা সমাগম বেড়েছে। আশাকরি, মেলায় ব্যবসা সফল হবে।

আমাদের আন্তরিকতার সবটুকু দিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে মেলা পরিচালনা করছি। ক্রেতা সমাগমে জমজমাট হচ্ছে বাণিজ্যমেলা।প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। সাপ্তাহিক বন্ধের দিনগুলোতে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা চলবে। এবারে মেলার প্রবেশমূল্য প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা ও শিশুদের জন্য ২০ টাকা। মেলার টিকিট চাইলে অনলাইনেও কিনতে পারবেন। এক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ ছাড় পাবেন।এবারের মেলায় দেশি-বিদেশি মিলে মেলায় মোট ৩৫১টি স্টল, প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন থাকছে। গতবার এই সংখ্যা ছিল ২২৫টি। মেলায় ১০টি দেশের ১৭ প্রতিষ্ঠানের অংশ নেওয়ার কথা- মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, পাকিস্তান, ভারত, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, হংকং, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল ও ইরান।