নিজস্ব বর্ণমালায় প্রাক-প্রাথমিকের পাঠ্যপুস্তক রচনার দাবি জানিয়েছে আদিবাসী সাঁওতাল জনগোষ্ঠী। গত শুক্রবার সকালে (১৭/০২/২০২৩) চাঁপাইনবাবগঞ্জ বঙ্গবন্ধু চত্বর সামনে মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।

উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখা; সাঁওতাল লেখক ফোরাম-বাংলাদেশ;  সান্তাল সমন্বয় পরিষদ; দি সান্তালস টাইমস ডট কম; সান্তালি নিউজ ২৪.কম ; কোল সমাজ উন্নয়ন সংগঠন; মাহালী দিঘরী পরিষদ যৌথভাবে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে। কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ১৭২ বছর ধরে সাঁওতালরা নিজস্ব সাঁওতালি (রোমান) বর্ণমালা ব্যবহার করছে। কিন্তু সাঁওতালদের প্রচলিত বর্ণমালা বাদ দিয়ে সাঁওতাল শিশুদের জন্য কখনও বাংলা হরফ কখনও অলচিকি হরফে প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তক রচনার অপচেষ্টা হয়েছে।

গারো, চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ও ওঁরাওদের জন্য নিজস্ব ভাষায় প্রাক- প্রাথমিক পাঠ্যপুস্তক প্রণীত হলেও সাঁওতালি ভাষায় পাঠ্যপুস্তক এখনও প্রকাশিত হয়নি। বক্তারা বলেন, তারা বাংলা ভাষা কিংবা বর্ণমালা বিদ্বেষী নন। কিন্তু এ বর্ণমালায় সাঁওতালি ভাষার শব্দের উচ্চারণ বিকৃত হয়, যা তাদের কাছে কষ্টকর। তাই সাঁওতালি বর্ণমালা ছাড়া অন্য কোনো বর্ণমালা ব্যবহার করে প্রাক-প্রাথমিক পাঠ্যপুস্তক রচনার উদ্যোগ তারা মানবেন না। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপত্তি লুইস টুডু।

এ সময় বক্তব্য রাখেন উত্তর বঙ্গ আদিবাসী ফোরাম ঢাকা কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হিংগু মুরমু, কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও প্রচার বিষয়ক সম্পাদক প্রদীপ হেমব্রম, জেলা সাধারণ সম্পাদক কর্নেলিয়াস মুরমু, সাঁওতাল লেখক ফোরাম-বাংলাদেশ'র পক্ষে সন্তোষ টুডু, শিক্ষক মদন মুরমু, শিক্ষার্থী ক্যাথিনা রিমি কিস্কু, অনামিকা হেমব্রম প্রমুখ। বক্তারা বলেন, কারও মাতৃভাষার ওপর কোনো কিছু জোর করে চাপিয়ে দেওয়া বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মূলনীতির পরিপন্থী। এটা ভাষাসৈনিক ও শহীদদের অপমানের শামিল। তাই কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের কথা না শুনে সাঁওতালি বর্ণমালায় পাঠ্যপুস্তক রচনার পদক্ষেপ গ্রহণে বক্তারা সরকারের কাছে অনুরোধ জানান।