চট্রগ্রামের পটিয়া থানায় শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি হামলার ঘটনাকে সাংবিধানিক মূল্যবোধ এবং গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার শামিল বলে আখ্যা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

চট্রগ্রামের পটিয়া থানায় শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি হামলার ঘটনাকে সাংবিধানিক মূল্যবোধ এবং গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার শামিল বলে আখ্যা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

আজ বুধবার (২ জুলাই) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র আয়েশা জাহান সিনথিয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতির মাধ্যমে এ দাবি জানানো হয়। এছাড়া এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হামলার সাথে জড়িত পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা নিশ্চিতসহ ৪ দফা দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

বিবৃতিতে বলা হয়, গতকাল ১ জুলাই ২০২৫, চট্টগ্রামের পটিয়া থানার সামনে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ও অগ্রহণযোগ্য ঘটনায় আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণরত আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ, ধাক্কাধাক্কি এবং অপমানজনক আচরণ রাষ্ট্রের সাংবিধানিক মূল্যবোধ এবং গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার শামিল। ঘটনার সূত্রপাত_ রাঙ্গামাটি জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি দিপংকর তালুকদারকে পটিয়াতে পেয়ে ছাত্রদল ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র-জনতা তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পুলিশ প্রশাসন তাকে গ্রেপ্তারে অপারগতা জানিয়ে উল্টো আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয়। এতে পটিয়া থানার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অন্তত ছয়জন আন্দোলনকর্মী আহত হন, যাদের মধ্যে কয়েকজন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা কোনোরূপ পূর্ব সতর্কতা বা পরিস্থিতি নিরীক্ষা না করেই অতর্কিত ছাত্রদের ওপর হামলা চালায়।


এতে আর বলা হয়, আমরা এই ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকাকে অনৈতিক, পক্ষপাতদুষ্ট এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের ক্লাসিক উদাহরণ হিসেবে দেখছি। একটি গণতান্ত্রিক দেশে আন্দোলন ও প্রতিবাদ করাটা নাগরিকের মৌলিক অধিকার, আর সেই অধিকার প্রয়োগ করতে গিয়ে পুলিশের নির্যাতনের শিকার হওয়াটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং নিন্দনীয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আবারও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চায়, আমরা কোনো ধরনের পুলিশি নিপীড়ন, ছাত্রদমন বা রাষ্ট্রীয় পক্ষপাতদুষ্টতা মেনে নেব না। রাষ্ট্র যদি নিজের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, জনগণের পক্ষ থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। আমরা দায়িত্বশীলভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাব, তবে প্রশাসনিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাস্তায়ও থাকব, মাঠেও থাকব, ইতিহাসের পাতাতেও থাকব। 


বিবৃতিতে প্লাটফর্মটি চার দফা দাবি জানায়। দাবীগুলো হলো:


১. পটিয়া থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জায়েদ নূরের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে তার কর্মকাণ্ডের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।


২. আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার সাথে জড়িত পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।


৩. আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে এবং প্রশাসনিকভাবে এই হামলার দায় সরকারকে নিতে হবে।


৪. ভবিষ্যতে এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে স্বচ্ছ পুলিশি আচরণবিধি নিশ্চিত করতে হবে এবং থানাগুলোতে রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে।