নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় পরোকিয়া প্রেমের কারনে প্রেমিক কে নিয়ে নিজের স্বামীকে হত্যার অভিযোগে এক নারীকে গেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে উক্ত ঘটনায় এখনো পলাতক রয়েছেন ওই প্রেমিক। এর আগে, রোববার দিনগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার ডুমুরুয়া ইউনিয়নের হরিণকাটা গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ওই নারীকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
নিহত মো. মঈন উদ্দিন (৪৫) উপজেলার ডুমুরুয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের হরিণকাটা গ্রামের ফকির বাড়ির মৃত রুহুল আমিনের ছেলে। চট্টগ্রামের ধনিয়ালাপাড়া এলাকায় তিনি নিজের একটি রেস্তোরাঁ চালাতেন। গ্রেপ্তার নারীর নাম রজ্জবের নেছা রিনা (৩৫)। এ ঘটনায় অপর অভিযুক্ত মো. মাসুদ (৩৫) তার প্রেমিক। কারোক্তিতে রিনা জানান, তার স্বামী মঈন উদ্দিন ব্যবসার কাজে প্রায়ই চট্টগ্রাম শহরে থাকতেন। দুই-তিন বছর আগে তিনি পাশের বাড়ির মাসুদের সাথে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে স্বামীর সাথে তার দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি হয়।
এর জেরে বছর খানেক আগে মঈন উদ্দিন রিনাকে ডিভোর্স দিলে তিনি বাবার বাড়িতে চলে যান। তবে তিন সন্তানের কথা ভেবে তাকে কিছুদিন আগে স্বামীর বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। এরপরও মাসুদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখায় মঈন উদ্দিনের সাথে মাসুদের বড় ধরনের শত্রুতা সৃষ্টি হয়। মাসুদ একাধিকবার মঈন উদ্দিনকে হত্যার হুমকি দেন। অবশেষে হত্যার তিন-চারদিন আগে এ নিয়ে পরিকল্পনা করেন রিনা ও মাসুদ।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, রোববার মঈন বাড়িতে এলে তাকে দুধের সাথে মিশিয়ে ১৪-১৫টি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে ফেলেন রিনা। রাত তিনটার দিকে তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় বাড়ির উঠানে নিয়ে মাথায় কুপিয়ে হত্যা করেন রিনা ও মাসুদ। পরে বাড়ির উঠানে তাকে ফেলে রেখে ঘরে ঢুকে উল্টো নাটক সাজান স্ত্রী। সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন জানান, এ ঘটনায় নিহতের মা রাহেলা আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে সেনবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ ঘটনার ১৮ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে নোয়াখালী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে।