পাইকগাছায় চড়ক পূজা উপলক্ষে গদাইপুর মাঠে চৈত্র সংক্রান্তি মেলা ও বৈশাখী উৎসবে উপছে পড়া ভিড় ছিলো। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে, কঠোর ব্রত ও অনুশাসনের মধ্যে দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে চড়ক পূজা উদযাপিত হয়েছে। চৈত্র মাসের শেষ দিন চৈত্র সংক্রান্তিতে পালিত হয় চড়ক পুজো। এটি মূলত বাঙালি হিন্দুদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লোক উৎসব।
নানা পার্বণের দেশ বাংলাদেশ। আর বাঙালি জাতি উৎসবমুখর। প্রবাদ রয়েছে বাঙালির বারো মাসে তের পার্বণ। বাঙালি সমাজের সাংস্কৃতিক প্রথা, ঐতিহ্য, আচার-অনুষ্ঠানাদির মধ্য দিয়ে প্রবাদটির সত্যতা মেলে। বছরের নানা সময়ে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে উৎসবকেন্দ্রিক মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে দীর্ঘদিন। মেলা বাঙালির লোক ঐতিহ্যের অন্যতম একটি অনুষঙ্গ। তবে নির্দিষ্ট কিছু মেলা জাতির কৃষ্টি ও সংস্কৃতির অন্যতম ধারক ও বাহক হয়ে উঠেছে। বাঙালির লোকসংস্কৃতির মেলার মধ্যে প্রথমেই আসেচৈত্র সংক্রান্তি মেলা ও বৈশাখী মেলার নাম। বাংলার বিভিন্ন জনপদে বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে সুদীর্ঘ কাল থেকে।
উপজেলার গদাইপুরে ঐতিহ্যবাহী বাজারখোলা গাছতলা মন্দিরে ৩দিন ব্যাপী চড়ক পূজা অনুষ্ঠিত হয়। চড়ক পূজার শেষ ও চৈত্র মাসের শেষ দিন গদাইপুর ফুটবল মাঠে চৈত্র সংক্রান্তি মেলা বসে। চলমান এ মেলাটি পরে বৈশাখী মেলায় রুপ নেয়। মেলায় মৃৎশিল্প, লোহা, কুঠির শিল্পসহ বিভিন্ন পন্য ও মিষ্টান্ন দ্রব্য বিক্রয় করা হয়। মেলায় নাগরদোলাসহ বিভিন্ন বিনোদনের ব্যবস্থা থাকায় শিশুদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। সোমবার ও মঙ্গলবার দুই দিন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৪ এপ্রিল মেলা ও ১৫ এপ্রিল মঙ্গলবার গ্রামীণ খেলা ও সন্ধ্যায় লোকজ সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মেলার সার্বিক পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন, চৈত্র সংক্রান্তি মেলা ও উৎসব উদযাপন কমিটির আহবায়ক অশোক কুমার ঘোষ, সদস্য সচিব সাংবাদিক প্রকাশ ঘোষ বিধান, আবু সালেহ মোঃ ইকবাল, আবুল হোসেন, ইউনুস সরদার, লিপটন সরদার, সামছুজ্জামান, মোখলেছুর রহমান কাজলসহ মেলা পরিচালনা কমিটির নের্তৃবৃন্দ। গ্রামীণ এ মেলায় প্রায় ১০ হাজার হাজার লোকের সমাগম ঘটে।