পিতা বিপুল সরকার পেশায় একজন শ্রমজীবী মানুষ। মাতা শিখা সরকার গৃহীনি। দুই ভাইয়ের মধ্যে জীবন বড়। সে পাইকগাছা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী হিসেবে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। বর্তমানে তার স্বপ্ন পদ্মা সেতু নিয়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করা। সে পায়ে (ম্যারাথন) হেটে পদ্মা সেতু স্পর্শ করার মধ্য দিয়ে নতুন এ রেকর্ড সৃষ্টি করতে চায়। ছোট বেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি জীবনের প্রচন্ড আগ্রহ ছিল। নবম শ্রেণিতে পড়াকালীন সময়ে ইউটিউব, টিভি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও দেখে ম্যারাথনের প্রতি তার আগ্রহ তৈরী হয়। সেখান থেকেই তার স্বপ্ন অলিম্পিকের ম্যারাথনে সে অংশ নিবে। স্বপ্ন পূরণে প্রথমে সে দেশের খ্যাতনামা ম্যারাথন ক্রীড়াবিদদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী নিজ এলাকায় প্রাক্টিস শুরু করে। অস্বচ্ছল পরিবারের সন্তান হওয়ায় ম্যারাথনের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ কেনার সক্ষমতা ছিলনা জীবনের।
নানা সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে প্রতিদিন সে নিজ এলাকায় ১০ কিলোমিটার ম্যারাথন প্রাক্টিস করে এবং প্রত্যেক সপ্তাহে পাইকগাছা থেকে কয়রা পর্যন্ত ৫ ঘন্টায় ৫০ কিলোমিটার ম্যারাথন প্রাক্টিস করে। এরপর সে দেশের বিভিন্ন ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। ইতোমধ্যে সে ২০২১ সালে দীঘলিয়ায় অংশ নিয়ে ১৫০ জনের মধ্যে ১৭তম, ঢাকায় অংশ নিয়ে ৩২২ জনের মধ্যে ২৩তম এবং ২০২২ সালে ঢাকায় অংশ নিয়ে ৫০ জনের মধ্যে ৪র্থ তম সাভারে অংশ নিয়ে ১৫০ জনের মধ্যে ৪র্থ তম স্থান লাভ করে। তার মূল স্বপ্ন সে অলিম্পিকের ম্যারাথনে অংশ নিবে। তার আগে সে পদ্মা সেতু নিয়ে নতুন একটি রেকর্ড সৃষ্টি করতে চাই। এ প্রসঙ্গে জীবন সরকার জানায়, আমি পায়ে (ম্যারাথন) হেটে পদ্মাসেতু নিয়ে নতুন রেকর্ড করতে চাই। আমার এলাকা পাইকগাছা থেকে পদ্মাসেতুর দূরত্ব ২২০ কিলোমিটার। আমি প্রতিদিন ৫৫ কিলোমিটার করে ৪ দিনেই পদ্মা সেতু পৌছাতে চাই।
এরআগে দেশে ৫০ কিলোমিটারের রেকর্ড রয়েছে। যে রেকর্ড আমি পদ্মা সেতু নিয়ে অতিক্রম করতে চাই। এ জন্য পদ্মা সেতু পর্যন্ত যাওয়া- আসার জন্য আমার শারীরিক ফিটনেস, থাকা- খাওয়া, চিকিৎসা, নিরাপত্তা সহ সার্বিক বিষয়ে মিডিয়া এবং প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে এ সংক্রান্ত বিষয় কথা হয়েছে বলে জানিয়েছে জীবন। প্রশাসনিক যে সহযোগিতার প্রয়োজন সে সংক্রান্ত সহযোগিতা করা হবে বলে জীবনকে জানিয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম।