সারা দেশের মত পিরোজপুরেও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজাকে ঘিরে চলছে সাজ সাজ রব মণ্ডপ, প্রতিমা তৈরির মাঠ ও মন্দিরগুলোতে এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। একই সঙ্গে পূজা প্রস্তুত করা হচ্ছে উপলক্ষে অস্থায়ী মণ্ডপগুলোও, যা এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
দুর্গোৎসবের প্রধান অনুষঙ্গ হলো দেবী দুর্গার প্রতিমা উৎসব সামনে রেখে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা পূজা শুরুর আগেই মা দুর্গাকে তুলতে হবে মণ্ডপে। ইতোমধ্যে প্রতিমার কাঠামোর মাটির কাজ শেষ পর্যায়ে। এখন শুরু রং ও সাজসজ্জার কাজ।
প্রতিমা তৈরির মাঠ গুলো ঘুরে দেখা যায়, দেবী দুর্গা ও তার বাহন সিংহের প্রতিমাসহ তৈরি করা হচ্ছে যাকে বধের জন্য দেবীর আগমন সেই মহিষাসুরের প্রতিমা এছাড়াও তৈরি হচ্ছে দেবী লক্ষ্মী, সরস্বতী, দেবতা কার্তিক, গণেশ, এবং তাদের বাহন পেঁচা, হাঁস, ইঁদুর প্রতিমা শিল্পীদের সঙ্গে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাদের কারিগররাও বিভিন্ন জায়গার পাকা মন্দিরগুলো রং আর কাপড়ের বাহারি সাজে সাজছে গান, নাচ, আরতি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাটকের মধ্য দিয়ে বর্ণিলভাবে উৎসব পালনের জন্য চলছে বিরামহীন প্রস্তুতি।
পিরোজপুরে মণ্ডপগুলোর প্রতিমার মাটির কাজ এরই মধ্যে প্রায় শেষ করে ফেলেছেন শিল্পীরা। মূর্তি গড়া শেষে রং তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হবে প্রতিমা অর্ডার অনুযায়ী প্রতিমা গড়তে তাদের চেষ্টার কোনো কমতি নেই। মৃৎশিল্পী ও তাদের সহযোগী কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অতিরিক্ত বৃস্টির কারনে সার্বিক প্রস্তুতি নিতে সময় কম পাওয়া গেছে। অল্প সময়ে তাই অধিক কাজের ব্যস্ততা চিন্তায় ফেলেছে তাদের। গত প্রায় দেড় মাস ধরে শিল্পীরা দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন।
কাজের ফাঁকে প্রতিমা শিল্পী সঞ্জয় পাল দৈনিক কাগজকে বলেন, এখনই বছরের সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত সময় পার করছি। পূজার আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। তাই দম ফেলার সময়ও নেই। এর মধ্যেই দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরির সব কাজ শেষ করতে হবে। তিনি জানান, জন্মের পর থেকেই এই কাজ দেখে ও শিখে আসছেন। শুধুমাত্র জীবিকার জন্যই নয়। দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে তাদের ধর্মীয় অনুভূতি, ভক্তি আর ভালোবাসা। দুর্গা মাকে মায়ের মতোই তৈরি করা হচ্ছে। পূজার আয়োজনে দিন রাত মিলিয়ে কাজ করছেন। তাদের অর্ডার পাওয়া সব প্রতিমা তৈরি কাজ প্রায় শেষ। তারা বলেন যত কষ্টই করি না কেন, যখন দেবীকে তার স্বরূপে মণ্ডপে বসানো হবে তখন সব কষ্ট দূর হয়ে যাবে। আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে যখন আমাদের তৈরি প্রতিমাকে সবাই পূজা করে। তখন আমাদের পরিশ্রম সফল, সার্থক মনে হয়।
জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে পূজা উদযাপন কমিটি শান্তিপূর্ণভাবে পূঝা অনুষ্ঠানের জন্য সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। পূজার প্রস্তুতি পর্যায়ে নিরাপত্তা প্রদানের কাজ করছে পুলিশ সদস্যরা। পূজার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যাশা, সবাই মিলে শান্তিপূর্ণ ও উৎসব মূখর পরিবেশে দূর্গা পূজা সম্পন্ন হবে।