ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের উদ্যোগে গতকাল ২১ জুন বিকাল ০৩ ঘটিকা কাকরাইল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউ হল রুমে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের উদ্যোগে গতকাল ২১ জুন বিকাল ০৩ ঘটিকা কাকরাইল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউ হল রুমে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য প্রকৌশলী শেখ আল আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান শুরু হয়। মহানগরী নেতা বিশিষ্ট সিনিয়র আইনজীবী এস এম কামাল উদ্দিন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। 

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মোঃ নূরুল ইসলাম বুলবুল  বলেন, ০৫ আগস্টের পর নতুন বাংলাদেশে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটি সরকারের হাতে ক্ষমতা বুঝিয়ে দেয়া। ক্ষমতা বুঝিয়ে দেয়ার আগে অবশ্যই নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে এবং নির্বাচন ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে হবে। অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ, সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনে সংস্কার আবশ্যক। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা, জনপ্রশাসন, বিচার ব্যবস্থা সংস্কারও প্রয়োজন। প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায় রাষ্ট্র ব্যবস্থার সংস্কার অতীব গুরুত্বপূর্ণ। 

তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, বিগত ১৭ বছরে গুম, খুন বিশেষ করে ৫ আগস্টে যারা গণহত্যায় জড়িত তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। ৫ আগস্টে আহত,পঙ্গুত্ববরণকারী, শহীদ পরিবার,ছাত্রজনতা, আপামর জনসাধারণ এবং ১৮ কোটি মানুষের শর্ত হচ্ছে সংস্কার ও বিচার। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা উপহার গ্রহণের উদ্দেশ্যে লন্ডনে গিয়ে একটি বিশেষ দলের প্রধানের সঙ্গে যৌথ স্টেটমেন্ট ও যৌথ প্রেস কনফারেন্স করে নির্বাচন নিয়ে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণের তারিখ পরিবর্তন করে ফেব্রুয়ারিতে নিয়ে আসার ঘোষণা অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত। এতে করে প্রধান উপদেষ্টা ও বর্তমান সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুন্ন হয়েছে যা অগ্রহণযোগ্য এবং তিনি ভুল করেছেন। এভাবে একটি দলের প্রধানের সাথে বসে যৌথ স্টেটমেন্ট,যৌথ প্রেস কনফারেন্স দেয়া ঠিক হয়নি। 

নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য, ভূমিকা এবং তাদের কথার টোন দেশের জনগণের কাছে মনে হয়েছে যে, একটি বিশেষ দলকে এগিয়ে নেয়ার জন্য দুরভিসন্ধি করা হচ্ছে। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, হাজার হাজার শহীদের রক্তের বিনিময়ে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। শহীদদের আকাঙ্খার সাথে সাংঘর্ষিক তৎপরতার সাথে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূল, দেশ ও বিদেশের কোন ধরনের প্রভাব ছাড়াই জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়ার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে না পারে তাহলে দেশের জনগণ তাদেরকেও ক্ষমা করবে না। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অ্যাসাইনমেন্ট বাস্তবায়নে যদি নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তাহলে দেশপ্রেমিক জনগণ তা প্রতিহত করতে প্রস্তুত রয়েছে। 

পরিশেষে প্রধান অতিথি বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে দাবী-দাওয়া, আন্দোলন, সংগ্রাম, বিপ্লব, প্রতি বিপ্লবের জন্য বহুবিধ ষড়যন্ত্র,চক্রান্ত হয়েছে সংস্কার ও বিচারের দিকে বর্তমান সরকার যেন মনোনিবেশ করতে না পারে। 
তিনি আরো বলেন, বিপর্যস্ত, বিধ্বস্ত, বাংলাদেশকে টেনে তুলতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশ ও জনগণের স্বার্থে প্রতিবাদ ও রাজপথে ভূমিকাসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করে আসছে। আগামী দিনগুলিতেও পাশে থেকে সহযোগিতা করবে। 

উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে  উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারি সেক্রেটারি মোঃ দেলাওয়ার হোসেন এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারি সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামাল হোসেন।

বিশেষ অতিথি মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন,নির্বাচনী কলাকৌশল ও ভোটকেন্দ্র পাহারাসহ প্রত্যেক কর্মীকে জামায়াতে ইসলামীর রিপ্রেজেন্ট করতে হবে। 

বিশেষ অতিথি মোঃ দেলাওয়ার হোসেন বলেন, যোগ্য নেতৃত্ব আর আনুগত্যশীল শক্তিশালী কর্মীবাহিনীর মাধ্যমে ইসলামী আন্দোলনের বিজয় নিশ্চিত হবে ইনশাআল্লাহ।