প্রসূতি নারী শাহিনা বেগমের বাড়ি ভোলার লালমোহন উপজেলার ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে। তিনি এই ওয়ার্ডের বাসিন্দা বধূর বাড়ির মো. এরশাদের স্ত্রী। রোববার (১ সেপ্টেম্বর ২০২৪) বিকেলে তার প্রসব বেদনা উঠে। এরপর স্বজনরা তাকে নিয়ে যান লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

প্রসূতিকে রক্তদান করে প্রশংসায় ভাসছেন ভোলার ইউএনও । ভোলার লালমোহনের মানুষের মুখে মুখে রটেছে তার সুনাম । মাটি ও মানুষের স্বজন ইউএনও তৌহিদুল ইসলাম।

প্রসূতি নারী শাহিনা বেগমের বাড়ি ভোলার লালমোহন উপজেলার ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে। তিনি এই ওয়ার্ডের বাসিন্দা বধূর বাড়ির মো. এরশাদের স্ত্রী। রোববার (১ সেপ্টেম্বর ২০২৪) বিকেলে তার প্রসব বেদনা উঠে। এরপর স্বজনরা তাকে নিয়ে যান লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

সেখানে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, শাহিনাকে এক ব্যাগ ‘ও নেগেটিভ’ রক্ত দিতে হবে। এমন দুষ্প্রাপ্য রক্তের খোঁজে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন প্রসূতি শাহিনার স্বজনরা। এরইমধ্যে তারা সন্ধান পান ‘রক্তদানের অপেক্ষায় লালমোহন’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের। সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে লালমোহন উপজেলায় রক্তদানসহ রক্তের জোগান এবং নানামুখী সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সংগঠনটির সঙ্গে প্রসূতির স্বজনরা যোগাযোগ করলে তারা বিভিন্ন জনের কাছে ‘ও নেগেটিভ’ রক্তের খোঁজ করেন।

কোথাও এই গ্রুপের রক্তের সন্ধান না পেয়ে তারা যোগাযোগ করেন লালমোহন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে। কারণ সংগঠনের সদস্যরা জানতেন ‘ও নেগেটিভ’ রক্তের বাহক ইউএনও। তিনি ঘটনা জেনে ওই প্রসূতিকে রক্ত দিতে রাজি হন। রোববার সন্ধ্যার পর স্থানীয় একটি ডায়াগনিস্টিকে গিয়ে মো. তৌহিদুল ইসলাম ‘ও নেগেটিভি’ গ্রুপের এক ব্যাগ রক্তদান করেন। এরপর রক্ত দেওয়া হয় শাহিনা বেগমকে। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর২০২৪) সকালে লালমোহন পৌরশহরের একটি ডায়াগনিস্টিকে ফুঁটফুঁটে একটি সন্তান প্রসব করেন তিনি।

লালমোহন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলামের এমন মানবিক কাজের জন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ওই প্রসূতির স্বজন এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘রক্তদানের অপেক্ষায় লালমোহন’ এর সদস্যরা। সংগঠনটির পরিচালক মো. সোহেল সর্দার বলেন, সচারচর ‘ও নেগেটিভ’ গ্রুপের রক্ত পাওয়া যায় না। এই গ্রুপের রক্ত অনেক দুষ্প্রাপ্য। তবে ইউএনও তার রক্তদান করে মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার দান করা রক্তের কারণে ওই প্রসূতি মা সুন্দরভাবে সন্তান প্রসব করেছেন। আমাদের সংগঠনের ডাকে ইউএনও সাড়া দিয়ে এই মানবিক কাজ করায় আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা চাই ওনার মতো সকলেই এগিয়ে আসুক মানবতার কল্যাণে।

এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, আমি ছাত্রজীবন থেকেই নিয়মিত রক্তদান করছি।  আমার দেয়া রক্তে যদি কারো জীবন বেঁচে যায় ; এরচেয়ে বেশি আনন্দ আর কিছুতে হতে পারে না। সুস্থ-সবল যে কেউ রক্তদান করতে পারে। সকলের কাছে আমি অনুরোধ করবো - কারো প্রয়োজন হলে নির্ভয়ে রক্তদান করুন। রক্তদানের মাধ্যমে জেগে ওঠে মানবতার পৃথিবী ।