গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রেমের দ্বন্দ্বে সাবেক প্রেমিকের ছুরিকাঘাতে সৈকত নামে এক প্রেমিকের মৃত্যু হয়েছে। এক প্রেমিকার সঙ্গে দুজনের প্রেমের সম্পর্কের জেরে ছুরিকাঘাতে ওই যুবক খুন হন বলে জানিয়েছে পুলিশ।


মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাত পৌনে ১০টার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার ভাংনাহাটি গ্রামের সি আর সি গার্মেন্টসের পাশে ঘটনাটি ঘটে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার ওসি।
নিহত সৈকত (২০) বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার হাওরাখালি গ্রামের মো. চাঁন মিয়ার ছেলে। তিনি শ্রীপুর পৌরসভার ভাংনাহাটি গ্রামের ইব্রাহিমের বাসায় ভাড়া থেকে স্থানীয় এমএচইসি এ্যাপারেলস কারখানায় কোয়ালিটি পদে চাকরি করতেন।

নিহতের চাচা শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ ৩ মাস আগে শ্রীপুরে এসে ভাড়া বাড়িতে থেকে ওই কারখানায় চাকরি নেন সৈকত। মঙ্গলবার রাতে কারখানা থেকে বের হলেও তার রুমে যাননি। পরে তার রুমমেট শাহানূর বিষয়টি পরিবারের লোকজনকে ফোন করে জানায় যে, সৈকতকে পাওয়া যাচ্ছে না এবং ফোনও রিসিভ করছে না। পরে আমি বেশ কয়েকবার তাঁকে ফোন দেই। রাত সাড়ে ১০টার দিকে খবর পাই রাস্তার পাশে একটা মরদেহ পড়ে আছে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি এটা ভাতিজার রক্তাক্ত মরদেহ। তার ঘাড়ে, গলায় ও পেটে একাধিক আঘাত রয়েছে। তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সেখানের ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। '
নিহত সৈকতের রুমমেট শাহানূর মিয়া বলেন, 'কারখানা ছুটির পর একসঙ্গে বের হয়ে পাশের দোকানে ঝালমুড়ি খেয়েছি আমি আর সৈকত। পরে রুমে চলে যাবো বললে সে আমাকে যেতে বলে এবং তার কাজ আছে বলে জানাই। পরে আমি বাসায় গেলেও রাত ৯টা পর্যন্ত সে আসেনি এবং তার মোবাইলও ধরে না। পরে আমি তাঁর চাচাকে জানাই। সৈকত রাত জেগে কারও সঙ্গে ফোন আলাপ করতো। কিন্তু কার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক সেটা আমাকে বলেনি।'

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ সাঈয়িদা ইমরোজ বলেন, মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় সৈকতকে। তার শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। প্রচুর রক্তক্ষরণে হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আমরা পুলিশকে অবগত করি।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল  বলেন, ‘ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রেমের সম্পর্কের দ্বন্দ্বে সৈকত নামের ওই যুবককে হত্যার বিষয়টি সামনে এসেছে। আমরা তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনা মামলা প্রক্রিয়াধীন।'