সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, ইউনিয়ন পরিষদের ১% অর্থ রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ সুরক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী ও পরিষদের পরিচালন ব্যয়ে বরাদ্দ থাকে। প্রতিটি প্রকল্পে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকার সীমা নির্ধারিত থাকলেও ফকিরহাট সদর ইউনিয়নে এই নিয়মের সরাসরি লঙ্ঘন হয়েছে।
অনিয়মের চিত্র
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, একই প্রকল্প দেখিয়ে পরপর তিন দফায় বিল উত্তোলন করা হয়েছে—
প্রথমবার: ১,২৬,০০০ টাকা
দ্বিতীয়বার: ৪,৯০,০০০ টাকা
তৃতীয়বার: ৫,০০,০০০ টাকা
সব মিলিয়ে মোট ১১,১৬,০০০ টাকা একই প্রকল্পে ব্যয় দেখিয়ে তোলা হয়েছে। অথচ ইউনিয়ন পরিষদের প্রকল্প বাস্তবায়নের ১% তহবিলে ২ লাখ টাকার বেশি ব্যয় আইনত অবৈধ। এইসব বিল অনুমোদনের পেছনে প্রকল্প কমিটি, ইঞ্জিনিয়ারিং অনুমোদন কিংবা কার্যসম্পাদনকারী ঠিকাদারের উপস্থিতির কোন তথ্য নেই।
অসমাপ্ত রাস্তাঘাট, ফাঁকা একাউন্ট
২০২২-২৩ অর্থবছরের বরাদ্দে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা নির্মাণের কথা থাকলেও আজও তা বাস্তবায়ন হয়নি। অথচ গত ৭-৮ মাসে ইউনিয়ন পরিষদের একাউন্ট থেকে লাখ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে, যার কোনো হদিস নেই পরিষদের অধিকাংশ সদস্যের কাছেই। সকল তথ্যের নিয়ন্ত্রণ কেবল চেয়ারম্যান শিরীনা আক্তার কিসলু এবং সাবেক সচিব আশীষ ব্যানার্জি'র হাতেই সীমাবদ্ধ বলে অভিযোগ উঠেছে।
আশ্রয়ন প্রকল্পেও দুর্নীতি
অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীনদের জন্য নির্মিত ঘর বরাদ্দে মোটা অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে। প্রকৃত অসহায়দের পরিবর্তে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ব্যক্তিরা ঘর পেয়েছেন। এ নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে প্রমাণ সহ একাধিক অভিযোগ উঠলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
চেয়ারম্যানের উপস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন
৫ আগস্টের পর কয়েকজন চেয়ারম্যান পরিষদে অনুপস্থিত থাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের অপসারণ করা হয়েছে। অথচ ফকিরহাট সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অন্যদের মতো অনুপস্থিত থাকলেও তিনি কীভাবে বহাল আছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।
জনমনে চাপা ক্ষোভ
সাধারণ মানুষের মুখে মুখে এখন একটি কথাই— "এই দুর্নীতির বিচার হবে তো?"
স্থানীয়দের মতে, যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে এই দুর্নীতির ঘটনা ভিন্ন রূপ নিতে পারে।