ফরিদপুর সদর উপজেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামে মিরান খান (৩৮) নামে এক যুবদল নেতাকে চোখ উপড়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাত ১২টার দিকে পদ্মা নদীর চরের ডাঙ্গীগ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত মিরান খান আলিয়াবাদ ইউনিয়নের পূর্ব সাদীপুর সেতুর পাশের জালাল খানের ছেলে। তিনি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মিরান বালু, মাছ এবং ইন্টারনেট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার স্ত্রী নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তিনি দুই কন্যাসন্তানের জনক।
মিরানের ছোট ভাই ইরান খান অভিযোগ করেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তিন মাস আগে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ তন্ময়ের সঙ্গে মিরানের বিরোধ তৈরি হয়। সেই ঘটনার জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে দাবি করেন তিনি।
ইরান আরও বলেন, "আমার ভাই কোনো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। আমাদের পরিবারের সচ্ছলতা এবং মাছ ব্যবসার প্রভাব বিস্তার নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। যেখানে তাকে হত্যা করা হয়েছে, সেটি একটি গুচ্ছগ্রাম। সেখানে ডাকাতির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। মূলত স্থানীয় প্রভাবশালীরা পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।"
এলাকার বাসিন্দা মনি শিকদার জানান, ঘটনাস্থলে মিরানকে বাঁচানোর জন্য কেউ এগিয়ে আসতে সাহস পাননি। রাতেই পুলিশকে খবর দেওয়া হলেও কুয়াশার কারণে তারা আসতে দেরি করে। ভোরে মিরানের স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার ফায়েকুজ্জামান জানান, শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) ভোর ৬টার দিকে মিরানকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তবে চিকিৎসকরা তাকে বাঁচাতে ব্যর্থ হন।
ফরিদপুর কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, “এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে মিরান গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি এবং আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।”
নিহতের পরিবার এ ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে। এলাকায় এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে আতঙ্ক ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সংশ্লিষ্টরা দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দাবি জানাচ্ছেন।