অভিযুক্ত অপরাধগুলোর মধ্যে রয়েছে যৌনাঙ্গে আঘাত, বন্দিদের দীর্ঘ সময় ধরে জোরপূর্বক নগ্ন রাখা, এবং অপমান ও জিজ্ঞাসাবাদের উদ্দেশ্যে অবমাননাকরভাবে নগ্ন তল্লাশি চালানো।
সংঘাত-সম্পর্কিত যৌন সহিংসতা নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে তার বার্ষিক প্রতিবেদনে গুতেরেস ইসরায়েলকে “সতর্কবার্তা” দিয়েছেন যে, আগামী বছর তাদেরকে এমন দলগুলোর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে যারা "বিভিন্ন নমুনার ধারাবাহিক ধর্ষণ বা যৌন সহিংসতায় জড়িত থাকার সন্দেহভাজন।"
তিনি লিখেন, "জাতিসংঘের দ্বারা ধারাবাহিকভাবে নথিভুক্ত কিছু নির্দিষ্ট ধরনের যৌন সহিংসতার নমুনা নিয়ে উল্লেখযোগ্য উদ্বেগ থেকেই এই সতর্কতা এসেছে।"
গুতেরেস আরও বলেন, যেহেতু ইসরায়েল জাতিসংঘ পর্যবেক্ষকদের প্রবেশাধিকার দেয়নি, তাই তাদের বাহিনী যৌন সহিংসতা নিয়মিতভাবে ব্যবহার করছে কিনা—এই বিষয়ে নিশ্চিতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া “চ্যালেঞ্জিং” হয়েছে। তিনি ইসরায়েল সরকারকে আহ্বান জানান “সব ধরনের যৌন সহিংসতা অবিলম্বে বন্ধ করতে এবং নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে তা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে।”
ইসরায়েলের জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন এই উদ্বেগগুলোকে "ভিত্তিহীন অভিযোগ" বলে অভিহিত করেছেন।
ড্যানন এক বিবৃতিতে বলেন, "জাতিসংঘের উচিত হামাসের যুদ্ধাপরাধ ও যৌন সহিংসতার বিষয়ে মনোযোগ আকর্ষণ করা এবং সব জিম্মিদের মুক্তির দাবি তোলা। ইসরায়েল তার নাগরিকদের রক্ষায় পিছপা হবে না এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী কাজ চালিয়ে যাবে।"
২০২৪ সালের জুলাই মাসে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায় যে, তারা গাজা থেকে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের আটক রাখার জন্য ব্যবহৃত এসডিই টাইমান কারাগারে এক ফিলিস্তিনি বন্দিকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে নয়জন সেনাকে আটক ও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
সেই সময়, ইসরায়েলি মিডিয়া জানায়, এক ফিলিস্তিনি বন্দিকে কারাগারের নিরাপত্তা প্রহরীরা গণধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে এবং তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
প্রতিবেদনে গুতেরেস রাশিয়ার সেনাবাহিনী, নিরাপত্তা বাহিনী ও মিত্র সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে ইউক্রেনের যুদ্ধবন্দিদের ওপর চালানো নির্ভরযোগ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে ৫০টি সরকারি এবং ২২টি বেসরকারি আটক কেন্দ্রে এসব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, নথিভুক্ত অনেক ঘটনায় বন্দিদের অপমান ও তথ্য আদায়ের জন্য যৌনাঙ্গে আঘাত, যেমন বৈদ্যুতিক শক দেয়া, প্রহার, আগুনে পোড়ানো, জোর করে কাপড় খোলানো এবং দীর্ঘ সময় নগ্ন অবস্থায় রাখার মতো পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে ।