সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশালীন ও আপত্তিকর মন্তব্য করে বিতর্কের মুখে পড়েছেন নরসিংদীর মাধবদী থানার আলগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শারমিন রেজোয়ানা। তার আচরণে শিক্ষক সমাজ, অভিভাবক মহল এবং সচেতন নাগরিকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

সম্প্রতি ফেসবুকে প্রকাশিত একাধিক ভিডিওতে তাকে অশোভন ও অপেশাদার ভাষায় বিভিন্ন ব্যক্তি সম্পর্কে মন্তব্য করতে দেখা গেছে। বিষয়টি নজরে আসার পর, ৮৮নং শেরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শিউলী রানী মিত্র জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় মহিলা সম্পাদিকা এবং নরসিংদী জেলা শাখার আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

অভিযোগপত্রে শিউলী রানী লিখেছেন, “একজন নারী শিক্ষক হয়েও শারমিন রেজোয়ানা যেভাবে সামাজিক মাধ্যমে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করছেন, তা শিক্ষকতা পেশার মর্যাদা ও নারী সমাজের ভাবমূর্তিকে কলঙ্কিত করছে। তার বক্তব্যে একাধিক সম্মানিত ব্যক্তি ও শ্রেণির প্রতি অবমাননাকর ভাষা ব্যবহৃত হয়েছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

তার বিতর্কিত ভিডিও ইতোমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষক মহলে দেখা দিয়েছে বিব্রতকর পরিস্থিতি, জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এখন শারমিন রেজোয়ানা। বিষয়টি নিয়ে অভিভাবক ও সচেতন মহলে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।

শিউলী রানী মিত্র বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীকে শিষ্টাচার শেখাই। অথচ একজন শিক্ষক হয়ে এমন ভাষা ও আচরণ পুরো পেশাকে নিচে নামিয়ে আনছে। দ্রুত তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়া না হলে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে গোটা শিক্ষাক্ষেত্রে।”

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নিরঞ্জন কুমার রায় জানান, “ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবন করে ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
 
শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, শারমিন রেজোয়ানার সব বিতর্কিত ভিডিও ও পোস্ট তৎক্ষণাৎ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে অপসারণ এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় শিক্ষক সংগঠনসমূহ কঠোর কর্মসূচির পথে যেতে বাধ্য হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন নেতারা।

একজন শিক্ষকের কাছ থেকে নৈতিকতা, শালীনতা ও দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশিত। শারমিন রেজোয়ানার কর্মকাণ্ড শুধুমাত্র তার ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি নয়, পুরো শিক্ষক সমাজ ও শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা নড়বড়ে করে তুলেছে—এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।