বন্ধুর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে বিয়ে করায় যশোরে আশরাফুল ইসলাম বিপুল (২৭) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শহরের ষষ্ঠীতলাপাড়া এলাকায় পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড চালানো হয়।

নিহত বিপুল যশোর শহরতলীর শেখহাটি জামরুলতলা এলাকার আখতার হোসেনের ছেলে। তিনি এসিআই গ্রুপের যশোর ডিপোতে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অভিযুক্ত বাপ্পী একই এলাকার স্যানিটারি মিস্ত্রি আব্দুল খালেকের ছেলে। এক সময় বিপুল ও বাপ্পী বন্ধু ছিলেন।

বিপুলের বাবা আখতার হোসেন জানান, বাপ্পী দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। তার এসব কর্মকাণ্ডের কারণে স্ত্রী সুমাইয়া এক বছর আগে তাকে তালাক দেন। এরপর সুমাইয়ার সঙ্গে বিপুলের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং কিছুদিন পর তারা বিয়ে করেন।

এ বিয়ে মেনে নিতে পারেনি বাপ্পী। ফলে বিপুল ও সুমাইয়া নিয়মিত হুমকি ও হয়রানির শিকার হন। আখতার হোসেন আরও জানান, কয়েক মাস আগে বাপ্পীর নেতৃত্বে তাদের বাড়ির সামনে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে।

শনিবার রাতে এক পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে বিপুলকে কৌশলে ডেকে নেয় বাপ্পী ও তার সহযোগীরা। ষষ্ঠীতলাপাড়া এলাকায় পৌঁছানোর পর তারা বিপুলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ শাকিরুল ইসলাম বলেন, “বিপুলের শরীরের একাধিক স্থানে গভীর ক্ষতের চিহ্ন ছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই তার মৃত্যু হয়।”

হাসপাতাল চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহত বিপুলের স্ত্রী সুমাইয়া, যিনি বর্তমানে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তিনি বলেন, “বাপ্পী অনেক খারাপ ছেলে। তাই ডিভোর্স দিয়েছিলাম। পরে বিপুলকে বিয়ে করি। এরপর থেকে আমাদের শান্তি ছিল না। ফোনে বাজে কথা বলতো, বোমা মারতো, থানাতেও অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু কেউ কিছু করেনি।”

যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত জানান, “ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে যায়। অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়েছে, আটকের চেষ্টা চলছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।”