গত ২৪শে মে ২০২৪ইং তারিখ রোজ শুক্রবার রাত আনুমানিক ১০ ঘটিকার সময় মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ০৬নং ওয়ার্ড খরকী নিবাসী মোঃ রাছেল চাপরাসি (৩২) এর স্ত্রী মোসাঃ ফারজানা (২৪) তাহার নিজ বসত ঘরে ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।

গত ২৪শে মে ২০২৪ইং তারিখ রোজ শুক্রবার রাত আনুমানিক ১০ ঘটিকার সময় মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ০৬নং ওয়ার্ড খরকী নিবাসী মোঃ রাছেল চাপরাসি (৩২) এর স্ত্রী মোসাঃ ফারজানা (২৪) তাহার নিজ বসত ঘরে ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।

ঘটনাস্থল থেকে জানা যায়, মোসাঃ ফারজানার একটি ছেলে সন্তান আছে যাহার আনুমানিক বয়স ০৩-০৪ হবে। তাহার ছেলে সন্তানটি শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। তাহার স্বামী রাসেল চাপরাসি প্রবাসে থাকেন। মোসাঃ ফারজানা বিয়ের পর থেকেই তার শশুর বাড়িতে অবস্থান করছেন।

ফারজানার শশুর মোঃ সেকান্দর চাপরাসি (৬৫) বলেন, “আমি বাজার থেকে ফিরে ঘরে আসার পরে তাহাকে (ফারজানা) ডাকি দরজাটা একটু খোলার জন্য। কিন্তু ভিতর থেকে কোন সারা শব্দ না পেয়ে আমি তাহার (ফারজানা) শাশুরিকে (মোসাঃ রাশিদা) পাঠাই এবং দ্বিতীয় তলায় চলে যাই। কিন্তু ফারজানার শাশুড়িও অনেক ডাকাডাকি করে যখন কোন সারা পায়নি তখন আমি এবং প্রতিবেশী পলাশ (৩০) নিচে এসে পিছনের জানালা দিয়ে ভিতরে দেখার চেষ্টা করি। কিন্তু জানালা দিয়ে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। পরবর্তীতে আমি প্রতিবেশী পলাশকে বলি দরজা ভেঙে ফেলার জন্য। তারপর পলাশ একটি সাপল দ্বারা দরজাটি ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখি আমার ছেলের বউ (ফারজানা) ফ্যানের সাথে ঝুলে আছে।”

এবং ফারজানার শাশুড়ি মোসাঃ রাশিদা বলেন, “আমি দোতলা থেকে নিচে এসে ফারজানাকে অনেক ডাকাডাকি করেও কোন সারা শব্দ না পেয়ে আমার স্বামীকে (মোঃ সেকান্দর চাপরাসি) ডাক দেই। পরবর্তীতে তারা প্রতিবেশীর সহযোগীতায় দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে।”

এছাড়াও, ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় যে, মোসাঃ ফারজানা (২৪) এর মৃত দেহ ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় একটি পা খাটের উপরে এবং অন্য একটি পা মেঝেতে। তাই প্রতিবেশীদের সন্দেহ যে, ঘটনাটি আত্মহত্যা না হয়ে খুনও হতে পারে।

তাছাড়া ফারজানার খালা মোসাঃ খালেদা (৩৫) বলেন, “আমার বোনের মেয়ে বিয়ের শুরু থেকেই এই পরিবারের অত্যাচার সহ্য করে আসছিলো। তাহার প্রথম ছেলে সন্তানটি জন্ম নেয়ার পরে যখন জানা যায় যে, তাহার সন্তানটি শারীরিক প্রতিবন্ধী। তখন থেকে ফারজানার শশুর এবং শাশুড়ি দুজনই ফারজানাকে অনেক বেশি ঘৃণার চোখে দেখেন। এমনকি ফারজানার নবজাতক সন্তানটিকেও কোলে নিতেন না কেউ। এছাড়াও ফারজানার স্বামী দেশে থাকা অবস্থায় আলাদা বিছানায় ঘুমাতো। কিছুদিন আগেও ফারজানা এত অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তাহার নানার বাড়ি মাস্টারহাটে চলে গিয়েছিলো। পরবর্তীতে তাহার নানা বাড়ির লোকজন তাহাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে পুনরায় তাহার শশুর বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। এবং তার কিছুদিন পরেই আজকের এই ঘটনাটি ঘটে। তাই আমি মনে করি যে, ফারজানার মৃত্যুর কারণ তার শশুর বাড়ির লোকজন।”

সবশেষে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং ভিক্টিমকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানার জন্য বরিশালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায় ।

শুধু ফারজানাই নয়, মেহেন্দিগঞ্জে প্রতিনিয়নত এই আত্মহত্যার ঘটনা বেড়েই চলেছে। তাই মেহেন্দিগঞ্জের মানুষজন প্রত্যাশা করে যে, এই গণআত্মহত্যা বন্ধের উদ্দ্যেশ্যে আইন যেন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে।