বগুড়ার শেরপুরে প্রবাসীর স্ত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগে মাহবুব সরকার (৪০) নামে কথিত প্রেমিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সে উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া গ্রামের শাজাহান আলী সরকারের ছেলে। এছাড়া আরেক গৃহবধূ ধর্ষণ মামলায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- উপজেলার রণবীরবালা গ্রামের জাহিদুল ইসলাম (৪০) ও একই গ্রামের মিন্টু ইসলাম (৩৭)।

গত সোমবার (১০ অক্টোবর) দিনগত রাত থেকে গত মঙ্গলবার (১১অক্টোবর) বিকেল পর্যন্ত উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের রণবীরবালা গ্রামে এবং শহরের খন্দকারপাড়া এলাকায় এই অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে ধর্ষণের শিকার ওই দুই ভুক্তভোগী নারী বাদি হয়ে শেরপুর থানায় পৃথক মামলা দায়ের করেন। মামলা সূত্রে জানা যায়, শহরের শান্তিনগর এলাকাস্থ একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন এক প্রবাসীর স্ত্রী। বেশকিছুদিন ধরেই মাহবুব সরকার নামের ওই ব্যক্তি তাকে উত্যক্ত করে আসছিল। একপর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন।

পরবর্তীতে বিয়ের প্ প্রলোভন দিয়ে বিগত ২৯ সেপ্টেম্বর গাড়ীদহ ইউনিয়নের দশমাইল এলাকার একটি বাসায় নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। আর এই ঘটনায় তাকে সহযোগিতা করেন একই ইউনিয়নের নিকাহ্ রেজিস্ট্রার (কাজী) বাংড়া উত্তরপাড়া গ্রামের গোলাম হোসেনের ছেলে শফিকুল ইসলাম শফিক কাজী (৪৮) ও দশমাইল এলাকার মোকাব্বর হোসেনের ছেলে তরু হোসেন (৫০)। সেইসঙ্গে ঘটনার পর থেকেই প্রবাসীর ওই স্ত্রীকে আইনের আশ্রয় না নিতে বিভিন্ন রকম ভয়ভীতি দেখানো হয়। তবে এসব উপেক্ষা করে ভুক্তভোগী নারী বাদি হয়ে মঙ্গলবার সকালে কথিত প্রেমিক মাহবুব ও তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন।

এরপর  পুলিশ অভিযান চালিয়ে শহরের খন্দকারপাড়া এলাকা থেকে মাহবুবকে গ্রেপ্তার করে। অপরদিকে বিগত ০১অক্টোবর রাতে উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের এক গৃহবধূকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়। ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী ঢাকায় গামেন্টেস্ চাকরি করেন। আর এই সুযোগ নিয়ে রনবীরবালা গ্রামের জাহিদুল ইসলাম ওই গৃহবধূর সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে প্রেম প্রস্তাব দেন। এতে রাজী না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন লম্পট জাহিদুল। ঘটনার দিন জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলায় মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান ঐ গৃহবধূর ২ সন্তান।  এসময় ঘরে কেউ না থাকার সুযোগে ওই গৃহবধূকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়।

আর মিন্টু ইসলাম নামে তার আরেক সহযোগী পাহারা দেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।  শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খোন্দকার এ প্রসঙ্গে বলেন, এসব ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় পৃথক ধর্ষণ মামলা নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে মামলা দায়েরের পরপরই অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলেই তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ধর্ষণের শিকার ওই দুই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান।