দেশে বালু উত্তোলন আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগ নেই। কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে লালমনিরহাটের বিমান বাহিনী কর্তৃৃপক্ষ মহাসড়ক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের একেবারেই নিকট থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করছেন।

অথচ যে পুকুর থেকে বালু উত্তোলন হচ্ছে সেটি একেবারেই লালমনিরহাট - রংপুর মহাসড়ক লাগোয়া। তার পাশ দিয়ে প্রতিদিন জেলা প্রশাসনের কর্তাকর্তারা চলাচল করলেও তা দেখেও না দেখার ভান করছেন। এযেন এক দেশে দুই আইন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। জানা গেছে, বিমান বন্দরের বুক জুড়ে বয়ে য়াওয়া লালমনিরহাট - রংপুর মহাসড়ক লাগোয়া বিমান বাহিনী লালমনিরহাট ইউনিটের একটি পুকুর রয়েছে। পুকুরটি কয়েক গজের মধ্যে অবস্থিত নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়, বহুতলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বিমান বন্দর রানওয়ে ও ঈদগাঁ মাঠ সহ পুরাতন গাছপালার মাঝখানে সেই পুকুর থেকে ক'দিন ধরে অবৈধভাবে ডাবল ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

ফলে বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে ছেড়ে আসা পাথর বোঝাই ট্রাক চলাচলের মহাসড়ক সহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। অথচ বাংলাদেশের প্রচলিত বালু আইনে উল্লেখ রয়েছে, ধারা ৪-এর (খ) অনুযায়ী, সেতু, কালভার্ট, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ। আইন অমান্যকারী দুই বছরের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

এ বিষয়ে এলাকাবাসী উদ্বেগ প্রকাশ করে ক্ষোভের সাথে বলেন, এযেন এক দেশে দুই আইন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। গরীবরা কোন জায়গা ভরাটের জন্য মেশিন লাগালে প্রশাসন গিয়ে মেশিনে আগুন দেন এবং জেল-জরিমানা আদায় করেন। আর গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে অবৈধ ভাবে বিমান বাহিনী ডাবল মেশিন দিয়ে ক'দিন ধরে বালু উত্তোলন করছেন। প্রশাসনকে বার বার জানানো পরেও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।

বিষয়টি নিয়ে বিমান বাহিনীর ওসি সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ এক টুকরো জমিও পরিত্যক্ত রাখা যাবে না। সেই লক্ষে বিমান বাহিনীর দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত পুকুরটি সাধারণ ড্রেজার মেশিন দিয়ে খনন করে জায়গা ভরাট করা হচ্ছে। এটি বোমা মেশিন নয়। তাই আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনার ক্ষতির কোন আশঙ্কা নেই। এ ব্যাপারে লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা মাসুম বলেন, বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানলাম, মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনকারী যেই হোক, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।