তবে বাস্তব চিত্র আরও ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। পদ্মা সেতুর প্রভাবে বেড়েছে গাড়ির চাপ, প্রতিনিয়ত নতুন রুটের গাড়ি যুক্ত হচ্ছে দক্ষিনাঞ্চলে। সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। পদ্মা সেতুর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বরিশালবাসী। তবে কি এই সব দোষ পদ্মা সেতুর? একদমই না। এর মূল কারন প্রশস্ত সড়কের অভাব, বাইপাস সড়ক না থাকা,যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং ও ট্রাফিক সিগনাল তোয়াক্কা না করা। নথুল্লাবাদকে যানজট মুক্ত করতে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল স্থানান্তরের প্রক্রিয়া আজও শেষ হয় নি। যানজট নিরসনে বাইপাস সড়ক নির্মানের প্রক্রিয়া চলমান থাকলেও দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে জমি অধিগ্রহণের কাজই এখনও আলোর মুখ দেখেনি। তবে এ যানজটের শেষ কোথায়? বরিশাল কি তবে গুলিস্তান হতে চলেছে?"বরিশালে বসে গুলিস্তানের স্বাদ নিচ্ছি" ঠিক এমন কথাই বলেছেন যানজটে বাসে বসে থাকা এক যাত্রী।
পদ্মা সেতুর কল্যানে বরিশালের সাথে সারা দেশের দূরত্ব কমেছে এবং অর্থনৈতিক উন্নতির পথে হাটছে বরিশালসহ দেশের দক্ষিনাঞ্চল। কিন্ত সেই উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাড়িয়েছে যানজট। নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল যানজটের ভাগাড়ে পরিনত হয়েছে। নথুল্লাবাদ থেকে নতুন বাজার যেতে সময লাগে ৫ মিনিট, যানজট এতটাই তীব্র আকার ধারন করেছে যে ৩০ মিনিটেও পৌছানো সম্ভব হচ্ছে না। চাকরিজীবি, ব্যবসায়ী, স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা ও মেডিকেলের পথযাত্রী রোগীরা পরেছেন চরম বিপাকে।
ফুটওভারব্রীজ না থাকায় রাস্তা পারাপারের সময় ঘটছে দূর্ঘটনা। নগর বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এই সমস্যা এক দিনে তৈরী হয় নি। অ-পরিকল্পিত নগরায়ন, সরূ রাস্তা, বাইপস সড়ক না থাকা, ফুটপাত দখল ও যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং যানজটের মূল কারন। স্বাধীনতার পর থেকেই দক্ষিনাঞ্চল ছিলো অবহেলিত জনপদ। বিভাগীয় শহর হয়েছে নামে মাত্র। তীব্র যানজটের শিকার বরিশালের তিনটি পয়েন্ট নথুল্লাবাদ, হাতেম আলী চৌমাথা ও রুপাতলী। ঢাকা থেকে বরিশালে আসতে সময় লাগে প্রায় ৩ ঘন্টা, পক্ষ্ন্তারে নথুল্লাবাদ থেকে রুপাতলী ১০ মিনিটের পথ যেতে সময় লাগে প্রায় ১ ঘন্টা । ফুটপাত আজ হকারদের দখলে। যত্রতত্র গাড়ি গাড়ি পার্কিং, তবে জনগনের হাটার জায়গা কোথায়? রাস্তা পারাপারে অহরহ ঘটছে দূর্ঘটনা। শত দূর্ঘটনা, আন্দোলনের পরও আজ অবধি বিভাগীয় শহর বরিশালে নির্মান হয় নি কোন ফুটওভার ব্রীজ।
পক্ষান্তরে জেলা শহর পটুয়াখালীতে দক্ষিনাঞ্চলের প্রথম ফুটওভার ব্রীজ। যেখানে মানুষ চলাচল না করলেও ছাগলের অবাধ চরন বিদ্যমান। ধূমাপায়িদের আড্ডা স্থল পটুয়াখালী ফুটওভার ব্রীজ। প্রয়াত মেয়র শওকত হোসেন হিরনের মৃত্যুর পর বরিশালের উন্নয়ন থমকে গেছে। বরিশাল বাসীর ধারনা তিনি বেচে থাকলে হয়তো আজ বরিশালের রুপরেখা অনেকাংশেই পরিবর্তন হয়ে যেতো। বরিশাল এমন এক শহর যেখানে পরিকল্পনা করে কিছু হয় না। প্রথমে রাস্তা নির্মান হয় তারপর রাস্তা কেটে ড্রেন নির্মান হয় আবার রাস্তা নির্মান হয় আবার রাস্তা কেটে পানির লাইন নেয়া হয়। অনেকটা লক্ষন দাসের সার্কাসের মত। বরিশাল বাসীর প্রাণেরর দাবী যানজট নিরসনে অতিসত্বর ব্যবস্থা গ্রহন করা হোক।