বিজয় দিবসের পবিত্র দিনে বরগুনায় আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মীর গোপন শপথ পাঠের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তুলেছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, তারা শেখ হাসিনার দেশে প্রত্যাবর্তন এবং জামায়াত-বিএনপিকে উৎখাত করার শপথ নিচ্ছেন। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে তা দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় এবং ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করে।
ভিডিওর বিবরণ
প্রায় ২ মিনিট ১০ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে বরগুনার একটি অজ্ঞাত স্থানে অল্পসংখ্যক নেতাকর্মীকে একত্রিত হতে দেখা গেছে। তাদের হাতে ছিল ব্যানার এবং বেলুন। ব্যানারে লেখা ছিল:
"শেখ হাসিনার হাত ধরে জঙ্গি জামায়াত খতম করো, মুক্তিযুদ্ধ আঁকড়ে ধরো"।
ব্যানারে বরগুনা জেলার পাশাপাশি কয়েকটি উপজেলার নাম উল্লেখ করা হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, নেতাকর্মীরা জাতীয় পতাকার রঙে সাজানো বেলুন উড়াচ্ছেন এবং শপথ পাঠ করছেন।
গোপন শপথের ভাষা
শপথ পাঠে নেতাকর্মীরা বলছেন:
"গৌরবময় মহান বিজয় দিবস ২০২৪। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাকে ষড়যন্ত্রকারীরা মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। শেখ হাসিনাকে দেশ থেকে ত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। আমরা মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শপথ করছি, জঙ্গি জামায়াত বিএনপির ষড়যন্ত্রের সমুচিত জবাব দেব। গণতন্ত্র রক্ষায় প্রয়োজনে নিজের জীবন উৎসর্গ করব।"
শপথে আরও উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নির্বিঘ্ন করতে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবেন এবং দেশের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ধরে রাখবেন।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিক্রিয়া
এ বিষয়ে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আব্দুল হালিম বলেন,
"ভিডিওটি দেখেছি। গোপনীয়ভাবে কয়েকজন মিলে বেলুন উড়িয়েছে। তবে কোথায় বসে এটি করেছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি এবং প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।"
সামাজিক প্রতিক্রিয়া
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই এটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র আলোচনা শুরু হয়। কেউ এটিকে একটি সাহসী উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ গোপন কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনা করছেন।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই ধরনের উদ্যোগে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে। শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি এবং জামায়াত-বিএনপির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের শপথ বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ধরনের শপথ গোপনীয় না রেখে প্রকাশ্যে করলে জনগণের সমর্থন পাওয়া যেতে পারে। তবে দলীয় কর্মসূচি গোপনে আয়োজন করার কারণে এর গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।
শেষ কথা:
বরগুনার এ ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে। ভিডিওর সত্যতা যাচাই এবং এ বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরবর্তী পদক্ষেপের দিকেই এখন সবার দৃষ্টি।