বাংলাদেশে ধর্ষণ একটি ক্রম বর্ধমান সামাজিক সমস্যা। বাংলাদেশে প্রতি ১ লাখ নারীর মধ্যে প্রায় ১০ জন ধর্ষণের শিকার হন

বাংলাদেশে ধর্ষণ একটি ক্রম বর্ধমান সামাজিক সমস্যা। বাংলাদেশে প্রতি ১ লাখ নারীর মধ্যে প্রায় ১০ জন ধর্ষণের শিকার হন। ২০২১ সালে গৃহীত এক হিসবে পাওয়া গেছে যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পূর্ববর্তী ৫ বছরে ৩০ হাজার ২৭২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাব অনুযায়ী ২০১৯ সালে এক হাজার ৪১৩ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন৷ ২০১৮ সালে এই সংখ্যা ছিলো ৭৩২ জন৷ অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় গত বছর ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে দ্বিগুণ যা ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি৷ ২০১৭ সালে ধর্ষণের শিকার হন ৮১৮ জন নারী৷ ২০১৯ সালে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৭৬ জনকে৷ আর আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন ১০ জন নারী৷বাংলাদেশে গণ ধর্ষণের ঘটনাও অহরহ ঘটে থাকে। বর্তমান সমাজে ধর্ষণ একটা সামাজিক অংশ হিসেবে দাঁড়িয়েছে প্রতিদিন কোন না কোন স্থানে ধর্ষণ হচ্ছেই এর উপায় কি। ধর্ষণ বন্ধ করার কি কোন উপায় নেই ক্রমবর্ধমান যৌননিগ্রহ ও ধর্ষণের জন্য মানবাধিকার কর্মীরা বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরেই বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে দায়ী করেছেন। বাংলাদেশে অধিকাংশ ধর্ষণের মামলায় কোনো শাস্তি হয় না। বাংলাদেশে ধর্ষণসহ নারীর প্রতি সহিংসতার যত মামলা হয় তার সর্বোচ্চ চার থেকে পাঁচ শতাংশ মামলায় আসামিরা শাস্তি পায়। আর শুধু ধর্ষণের হিসাব করলে এই হার আরো অনেক কম হবে। এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হওয়ায় জটিলতা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের মতে এইসব ধর্ষণ বা গণধর্ষণের ঘটনাগুলোর সঙ্গে ক্ষমতাশালীরা জড়িত থাকায় তাদের বিচার হয় না৷ আবার অনেক সময় পুলিশ এইসব ক্ষমতাশালীদের গ্রেফতারও করে না৷ যারা রাজনৈতিকভাবে বা আর্থিকভাবে ক্ষমতাশালী তাদের কেউ কেউ গ্রেফতার হলেও জামিনে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে৷ ফলে এই অপরাধীদের বিরুদ্ধে সমাজে খুব ভালো বার্তা যাচ্ছে না৷ এই কারণে এদের থামানোও যাচ্ছে না৷ এই অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে অবশ্যই অপরাধ কমে যাবে৷।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। ২০২২ বাংলাদেশ কয়েকটি আলোচিত ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় দেশজুড়ে ধর্ষণ-নির্যাতন বিরোধী আন্দোলন গড়ে ওঠে। আন্দোলনকারীরা ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবি তুলে। ফলে ২০২০-এর ১৩ অক্টোবর ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশে সই করা হয়। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে ২৭,৪৭৯টি ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের দাবী যে, ধ্রত ধর্ষণ মামলার বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে ভবিষ্যতে ধর্ষণ জনীত অপরাধ ভয়ংকর রূপ নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মূখম কারণ হিসাবে দেখা হচ্ছে যে,পূর্ববর্তী ধর্ষণ জনীত অপরাধ চাপা দেয়া হয়েছে। এ জন্য ধর্ষণ জনীত অপরাধ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।