হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচংয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ৯ জনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচংয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ৯ জনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের আদেশ দিয়েছেন আদালত।শনিবার (১৬ই নভেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বানিয়াচং থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে তিনি হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মরদেহ উত্তোলনের আদেশ চেয়ে আবেদন করেন। পরে বিচারক আবদুল আলীম তা মঞ্জুর করেন। তবে আদালতের আদেশ পেলেও জেলা প্রশাসন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট না দেওয়ায় মরদেহ উত্তোলন সম্ভব হয়নি। ম্যাজিস্ট্রেট পেলে শিগগিরই এ আদেশ বাস্তবায়ন করা হবে তিনি আরো জানান, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে দায়ের করা হত্যা মামলায় আদালত এ আদেশ দিয়েছেন।গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন বেলা ১১টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাগরদিঘীর পশ্চিমপাড় ঈদগাহ মাঠ থেকে মিছিল বের করে। গ্যানিংগঞ্জ বাজার প্রদক্ষিণ শেষে মিছিলকারী ৪-৫ হাজার লোক বড়বাজার শহীদ মিনারে গিয়ে জড়ো হন। পরে বিক্ষুব্ধ লোকজন মিছিল নিয়ে থানার সামনে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়।আন্দোলনকারীদের ইট-পাটকেলের জবাবে পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলে চারজনসহ সাতজন নিহত হন।এ সময় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার গণপিটুনিতে এক সাংবাদিক নিহত হন। মোট মৃতের সংখ্যা হয় আটজন। এরপর বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা থানার এসআই সন্তোষ চৌধুরীকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। পরদিন গুলিবিদ্ধ আরেকজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।নিহতরা হলেন- বানিয়াচং উপজেলার ভাঙ্গার পাড়ের ছানু মিয়ার ছেলে হোসাইন মিয়া, জাতুকর্ণপাড়ার আব্দুন নূরের ছেলে আশরাফুল ইসলাম, আব্দুর রউফ মিয়ার ছেলে তোফাজ্জল হোসেন, পাড়াগাঁওয়ের ম. শমসের উল্লার ছেলে মোজাক্কির মিয়া, পূর্বগড়ের ধলাই মিয়ার ছেলে সাদিকুর রহমান, কামালখানী মহল্লার মৃত আলী হেসেনের ছেলে শেখ নয়ন হোসেন, সাগর দিঘীর পূর্বপাড়ের মৃত মোশাহিদ আখঞ্জীর ছেলে সোহেল আখঞ্জী, চানপুরের মৃত তাহের মিয়ার ছেলে আকিনুর রহমান ও খন্দকার মহল্লার আবুল হোসেনের ছেলে আনাস মিয়া।এ ঘটনায় নিহত নয়জনের পরিবারের পক্ষ থেকে, এসআই সন্তোষ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে ও আহত একজনের বাবার পক্ষ থেকে মোট তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় আসামি প্রায় ১০ হাজার।