যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত। গত (২৭ জুলাই) নরসিংদী জেলা ছাত্রদল নেতা সাদেক ও আশরাফুল হত্যা মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। আদালত সূত্রে জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কেন্দ্র করে নরসিংদীতে সাদেকুর রহমান ও আশরাফুল নামে ছাত্রদলের দুই নেতা নিহত হওয়ার ঘটনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকন এবং তার সহধর্মিণী বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানাসহ ৩০ জনের নামে নরসিংদী মডেল থানায় হত্যা মামলা হয়। ওই মামলায় খায়রুল কবির খোকন গত ৫ জুন হাইকোর্ট থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। এ ছাড়া ৬ সপ্তাহের মধ্যে তাকে নিম্ন আদালতে হাজির হতে বলা হয়।
হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী, গত ১৩ জুলাই নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন প্রার্থনা করেন খোকন। পরে আদালত তার জামিন ২৭ জুলাই পর্যন্ত মঞ্জুর করেন। গত (২৭ জুলাই) জেলা দায়রা ও জজ আদালতে ওই মামলায় স্থায়ী জামিনের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু আদালতে হাজির না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে সময় প্রার্থনা করেন তিনি। আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে খোকনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যুর নির্দেশ দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম জানান, বিএনপি নেতা খোকন উচ্চ আদালত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন নিয়েছিলেন। আজ স্থায়ী জামিন শুনানি ছিল। কিন্তু তিনি আদালতে উপস্থিত না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে সময় প্রার্থনা করেন। আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। চলতি বছরের গত ২৬ জানুয়ারি জেলা ছাত্রদলের পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।ঘোষিত ওই কমিটিতে সিদ্দিকুর রহমানকে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও মেহেদী হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ছিলেন মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া।
প্রত্যাশিত পদ না পাওয়ায় পদবঞ্চিত নেতা মাইন উদ্দিন ও তার অনুসারীরা খোকনের গাড়িবহরে হামলা চালায়। দফায় দফায় ভাঙচুর করা হয় দলীয় কার্যালয়। ২৫ মে দুপুরে ছাত্রদল নেতা সাদেকুর ও মাইনুদ্দিনের নেতৃত্বে পদবঞ্চিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পিকআপ ও ১০০ মোটরসাইকেলে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে চিনিশপুর বিএনপির কার্যালয়ের দিকে রওনা হয়। পথিমধ্যে খোকনের নির্দেশে তাদের মিছিলে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। লাঠি ও ধারাল অস্ত্র দিয়ে হামলা করে অনেক নেতাকর্মীকে আহত করেন। ওই সময় সন্ত্রাসীরা সাদেকুর রহমানকে ঘেরাও করে মাথায় গুলি করে। গুলিবিদ্ধ হন আশরাফুলও।তাদের উদ্ধার করে প্রথমে জেলা হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সাদেকুর মারা যান। এর একদিন পর সকালে মারা যান আশরাফুলও। এ ঘটনার প্রতিবাদে ৩১ মে খায়রুল কবির খোকনের চিনিশপুরের বাসভবনে পদবঞ্চিত নেতারা আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা খোকন।