অর্থের অভাবে চিকিৎসা সংকটে পরে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের যোদ্ধা মনিরুজ্জামান মনির। আর্থিক সহায়তা কামনা।
সুত্রে জানাযায়, গত জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবে শেখ হাসিনার সরকার পতনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছাত্র-জনতা নেতাকর্মীরা রাজধানী ঢাকা অভিমুখে যাত্রা শুরু করে।
এসময় রাজধানী অভিমুখে যাত্রাকালীন সময়ে সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানার এলাকায় দলীয় সরকারের নির্দেশনায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছাত্র-জনতার উপর হামলা ও লাঠিচার্জ করে।এবং পুলিশের ছোড়া টিআরশেল,রাবার বুলেটে অসংখ্য ছাত্র-জনতা আঘাত প্রাপ্ত হয়।
ওইদিন চলমান আন্দোলনে সক্রীয় অংশগ্রহণ করে ছাত্রলীগের লাঠিচার্জ নির্যাতনে ও পুলিশের ছোড়া টিআরশেল,রাবার বুলেটে আঘাত প্রাপ্ত কাজিপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়নের ডিক্রীদোরতা গ্রামের মৃত্যু-আলী আজম শেখ ও মাতা- মৃত্যু-লাইলি খাতুনের ছেলে সহকারি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান মনির (৩৫) ও তার শিশুসন্তান ইমামুল মোরছালিন পুস্পারাজ ( সাড়ে তিন বছর) চরম ভাবে আঘাতপ্রাপ্ত ও রক্তাক্ত মারাত্মক জখম হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসায় আর্থিক সংকটে পরে পরিবার পরিজন নিয়ে
অর্ধাহারে-অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
অসহায় মনিরুজ্জামান মনির সাংবাদিকদের বলেন, গত(৪ আগষ্ট২০২৪)তারিখে আশুলিয়া থানা এলাকায় আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার উপর সাবেক আওয়ামিলীগ দলীয় সরকারের নির্দেশনায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছাত্র-জনতার উপর হামলা ও লাঠিচার্জ করে, এসময় পুলিশের ছোড়া টিআরশেল,রাবার বুলেটে অসংখ্য ছাত্র-জনতা আঘাত প্রাপ্ত হয়।
অনেক এই আঘাতে মৃত্যু বরনকরা সহ অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মী হামলা লাঠিচার্জে মনিরুজ্জামান মনির ও তার শিশুসন্তান ইমামুল মোরছালিন পুস্পারাজ চরম ভাবে আঘাতপ্রাপ্ত ও রক্তাক্ত মারাত্মক জখম হয়।পুলিশের ছোড়া টিআরশেল,রাবার বুলেটে আমি আমার বাম হাতে রাবার বুলেট ঢুকে মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত জখম হয়ে রাস্তায় ঢলে পড়ি।
এসময় পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাকে ও আমার শিশুসন্তানকে লাথি মেড়ে রাস্তায় থাকা নর্দমার ভিতর ফেলে দেয়। এতে আমার শরীরের কোমর,মাজায় পিটিয়ে মারাত্মক ভাবে আহত করে অচল করে দেয়।
আমার শিশুসন্তানের পা ধরে ময়লা আবর্জনা যুক্ত নর্দমার ভিতর ফেলে দেয়। এতে শিশু সন্তানের শরীরের চোখে আঘাত,পেটে আঘাত ও পাছায় কাচ ঢুকে মারাত্মক ভাবে আহত হয়।
পরবর্তীতে স্থানীয় পথচারী ও জনসাধারণ আমাদেরকে রক্তাক্ত মারাত্মক জখম অবস্থায় উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী ডাক্তারের নিকট নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে। আমার ও আমার শিশুসন্তানের জীবনের নিরাপত্তার জন্য দ্রুত বাড়িতে ফেরার জন্য গাড়িতে উঠিয়ে দেয়। পরে আমি মনিরুজ্জামান মনির ও আমার শিশুসন্তান ইমামুল মোরছালিন পুস্পারাজ আত্মগোপনে থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকি।
এতে আমার শিশুসন্তান ইমামুল মোরছালিন পুস্পারাজ দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর সুস্থ্য হলেও আমি মনিরুজ্জামান মনির আমার শরীরে থাকা রাবার বুলেট বের করলেও আমার বাম পায়ে ফরেন বডি ভিতরে থাকায় (ইনফেকশন) পচন ধরে যায়।
এতে আমাকে আমার পরিবারের দেওয়া সংবাদে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক সজীব সরকার ও অন্যান্যরা আমাকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের যোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে যোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করে আমার সুচিকিৎসা প্রদানের জন্য গত (১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) ইং তারিখে সিরাজগঞ্জ সদর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
এতে হাসপাতালের চিকিৎসকগন আমাকে চিকিৎসার জন্য ৪ তলায় ২৭৪ নং সিরিয়ালে (২৯ নং বিছানায়) নিয়ে ভর্তি করে। হাসপাতালে ভর্তির পর ৩ তলায় (জরুরি বিভাগ ওটি)অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রপঁচার করে।
অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্র পঁচার শেষে তারা আমার শরীরে বুলেট থাকা স্থান ও ফরেন বডি আঘাত প্রাপ্ত স্থান মেবাইলের মাধ্যমে ছবি উত্তোলন করে এবং আমাকে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তর থেকে আর্থিক অনুদান প্রদানের আশ্বাস দিয়ে চলে যায়। এরপর আর কোন খোঁজখবর নেয় নাই বলেও জানান।
এরপর হাসপাতালে ভর্তি থাকাবস্থায় দীর্ঘদিন চিকিৎসারত অবস্থায় থাকায় অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে কোনরুপ উপায়ন্তর না দেখে মনিরুজ্জামান মনির গত (০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ইং তারিখে বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ড,ইউনুস মিন্টো রোডস্থ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন(রেজিস্ট্রার ৪৫৩),বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহবায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ্ (রেজিস্ট্রার ৩৭৯),বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিরাজগঞ্জের সমন্বয়ক আহবায়ক সজীব সরকার (রেজিস্ট্রার ৩৮০), সহ বিভিন্ন দপ্তরে ডাকযোগে রেজিস্ট্রী করে দরখাস্ত প্রদান করেও আজ-অব্দি কোনরূপ পদক্ষেপ গ্রহন করে নাই বা কোনরূপ আর্থিক সহায়তা করে নাই। এতেকরে অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে আর্থিক সংকটে অর্ধাহারে-অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছি বলেও জানান। এবিষয়ে সুচিকিৎসার আর্থিক সহায়তা কামনা করছেন অসহায় মনিরুজ্জামানের পরিবার।