জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে জীবিত স্বামীকে ‘মৃত’ দেখিয়ে স্ত্রীর মিথ্যা মামলার ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকার আশুলিয়ায়।বৈষম্য

জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে জীবিত  স্বামীকে ‘মৃত’ দেখিয়ে স্ত্রীর মিথ্যা মামলার ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকার আশুলিয়ায়।বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনীর গুলিতে স্বামী আল-আমিন নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে মামলা করেন আল-আমীনের স্ত্রী  কুলসুম বেগম। এ ঘটনার প্রায় তিন মাস পর সোমবার (১১ নভেম্বর) আল-আমিন সিলেটের মহানগর দক্ষিণ সুরমা থানায় এসে হাজির হয়ে পুলিশকে জানান, তার স্ত্রী তাকে ‘মৃত’ দেখিয়ে মিথ্যা মামলা করেছেন।মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহীনুর কবির বলেন, জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে কুলসুম বেগম তার স্বামীকে নিহত দেখিয়ে হত্যা মামলা দায়ের করে। আমরা ভিকটিমকে উদ্ধার করে আশুলিয়া থানা হেফাজতে রেখেছি। তাকে জবানবন্দির জন্য বুধবার (১৩ নভেম্বর) আদালতে তোলা হবে। একই সঙ্গে মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগে স্ত্রীর বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।গত ২৪ অক্টোবর কুলসুম বেগম (২১) নামে এক নারী তার স্বামীকে হত্যার অভিযোগ এনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনকে আসামি করে ঢাকা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন।মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সাবেক ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুছ ছালামসহ ১৩০ জনের নাম উল্লেখ আছে। মামলায় বাদী কুলসুম বেগম মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানার স্বল্প সিংজুরী বাংগালা গ্রামের ঠিকানা ব্যবহার করেন। অন্যদিকে স্ত্রী কুলসুমের করা মামলার এজাহারে জানা যায়, আল-আমিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় ছাত্রদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন। সেদিন বিকেল ৪টার দিকে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের খবর আসলে আন্দোলনরতরা বিজয় মিছিল করেন। এ সময় আওয়ামী লীগের কর্মীরা পরাজয় মেনে নিতে না পেরে বাইপাইলে এলোপাতাড়ি গুলি ও লাঠি চার্জ করেন। তখন আন্দোলরতরা বাইপাইল এমপি মার্কেটের সামনে অবস্থান নেন। পরে সেখানে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী নির্বিচারে ছাত্র, সাধারণ মানুষ ও গার্মেন্টস শ্রমিকদের ওপরে অমানবিকভাবে গুলি চালায়। গুলিতে আল-আমিন মারা যান। পরে ৬ আগস্ট আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালে আল-আমিনের স্ত্রী কুলসুম জানতে পারেন, অনেক লাশ গোসল করিয়ে জানাজা পড়িয়ে আশুলিয়ার দরগাপাড় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। সেখানে কুলসুম গিয়ে ডকুমেন্ট, ছবি এবং ভিডিও দেখে তার স্বামী আল-আমিনের মরদেহ দাফন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন। এর পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কুলসুমকে বিভিন্ন কাগজপত্র প্রদান করে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনায় কুলসুমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।