কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী ফারুক আহাম্মেদ রাজুর হত্যাকারীদের দ্রæত গ্রেফতার করে ফাঁসির রায় কার্যকরের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের উত্তর ত্রিশ গ্রামে মানববন্ধন ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, কোম্পানীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী ফারুক আহাম্মেদ রাজুকে চাচাত ভাই ও বন্ধুরা মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। খুনীরা ফারুকের শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলে।
এই নির্মম হত্যার ঘটনার ১১বছর পর বিচার কাজ শেষে গত বছরের ১১ জুলাই আদালত চার জনের ফাঁসির রায় দেন। রায়ের পর একবছর হতে চলছে কিন্তু এখনো কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি। প্রশাসনের কাছে দাবী জানাই দ্রুত সময়ের মধ্যে খুনিদের গ্রেফতার করে ফাঁসির রায় কার্যকরের দাবী জানাই।
এসময় বক্তব্য রাখেন, নিহত ফারুকের মা ফাতেমা বেগম, বাবা মোস্তফা সরকার, ইয়াসমিন বেগম, আল আমিন, সুমন সরকার, জুলেখা বেগম।
নিহত ফারুকের প্রবাসী ভাই মাসুম রানা বলেন, আমি ভাই হারা, ১২বছর আগে আমার ভাইকে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। আদালতের রায়ের পরেও এখনো কোন আসামী ধরতে পারেনি পুলিশ। আমি বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা মন্ডলীর কাছে আকুল আবেদন করি আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে ফাসির রায় কার্যকরের ব্যবস্থা করুন।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না। ওয়ারেন্ট অফিসারের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২রা ডিসেম্বর রাতে পাওনা টাকা নিয়ে দন্দের জের ধরে কাপড় ব্যবসায়ী ফারুক আহাম্মেদ রাজুকে ফোন করে ডেকে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যার পর শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে সেফটিক ট্যাংকে ফেলে দিয়ে দেহটিকে একটি মাঠে বালুচাপা দিয়ে রাখে দুর্বৃত্তরা। এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে আশেপাশের মানুষ বালুর মাঠে গিয়ে চাপাদেয়া অবস্থায় মানুষের হাত দেখতে পেয়ে পুলিশকে অবগত করে। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধারের পর পাশের একটি সেফটিক ট্যাংক থেকে ব্যবসায়ী ফারুকের কাটা মাথা উদ্ধার করে।
এঘটনায় নিহতের বাবা গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন এসআই আনোয়ার হোসেন তদন্ত শেষে ৪ আসামীর বিরুদ্ধে চার্জশীট দেন। দীর্ঘ শুনানি ও ২২জনের সাক্ষ্য গ্রহন শেষে বিজ্ঞ আদালত মুরাদনগর উপজেলার উপজেলা নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের উত্তর ত্রিশ গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে রফিক (২৫), ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর গ্রামের ইউনুছ মিয়ার ছেলে নাজমুল সিকদার (২০), দেবিদ্বার উপজেলার ভিংলাবাড়ী গ্রামের মালু মিয়ার ছেলে মান্নান (২৭), একই উপজেলার দক্ষিন ভিংলাবাড়ী গ্রামের রঞ্জু মিয়ার ছেলে সুমন (২৮) কে ফাসির রায় দেন।