ভৈরবে থানার সহায়তায় মাদক ব্যবসা চলে। মাদক ব্যবসায়ীদের কেউ চ্যালেঞ্জ করলে বলে, ‘এইটা থানার মাল’। তখন আর কেউ বাধা দিতে চান না। ১৩ আগস্ট রোববার সকালে কালেক্টরেট সম্মেলন কক্ষে জেলা আইন শৃংখলা কমিটির মাসিক সভায় এমন কথাই জানালেন ভৈরব পৌরসভার মেয়র ইফতেখার হোসেন বেনু। তিনি আরও বলেন, ভৈরবে থানার চাকরির বেতনের চেয়ে মাদকের ইনকাম অনেক বেশি। উপজেলা প্রশাসনও এক্ষেত্রে সহায়তা করে না বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ভৈরবের কোন মাদকের মামলার আসামি কারাগার থেকে জামিনে যাওয়ার পর জিজ্ঞাসা করলে বলে, কারাগারে টাকা দিলে সবই পাওয়া যায়। মাদকও পাওয়া যায়। এরা গ্রেপ্তার হয়ে আসলে কিছু আইনজীবী বিনা টাকায় জামিন করিয়ে দেন। জামিনে বেরিয়ে গিয়ে আইনজীবীর টাকা পরিশোধ করে। মেয়র আইনজীবীদের প্রতি মাদকের মামলার আসামিদের সহায়তা না করার আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ভৈরবকে মাদকমুক্ত করা গেলে পুরো কিশোরগঞ্জ মাদকমুক্ত হবে।
আইন শৃংখলা কমিটির সভার সভাপতি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ ভৈরবের মেয়রকে সমস্যাগুলো আলোচনা করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সবাই মিলে কাজ করলে এসব সমস্যা সমাধান করা যাবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রট বলেছেন, ভৈরবের মেয়র অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। তাঁর কথাগুলো পুলিশ সুপারও শুনেছেন, আমিও শুনেছি। এ ব্যাপারে আমরা নজর রাখবো। পুলিশ সুপার এ প্রতিনিধিকে ভৈরবের মেয়রের বক্তব্য সম্পর্কে বলেছেন, মেয়র সাহেব যেসব অভিযোগ করেছেন, এগুলি আমি সভায় চ্যালেঞ্জ করিনি। কারণ আমার কাছেও কিছু কিছু অভিযোগ আসে। কয়েকদিন আগেও একজন কনস্টেবল ড্রাইভারকে সাময়িক বরখাস্ত করেছি। ফলে কাউকে জড়িত পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মেয়রের অভিযোগ সম্পর্কে ভৈরব থানার ওসি মোহাম্মদ মাকছুদুল আলমকে প্রশ্ন করলে বলেন, এসব অভিযোগ সঠিক নয়। এখানে এরকম কোন পুলিশ সদস্য মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয়। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মমতাজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, সিভিল সার্জন সাইফুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ, পাকুন্দিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেনু, কটিয়াদী উপজেলা চেয়ারম্যান মুশতাকুর রহমান, জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম, জেলা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মুজিবুর রহমান বেলাল প্রমুখ।