গ্রেপ্তাররা হলেন- ভোলা পৌরসভা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হাসপাতাল রোড এলাকার নুর উদ্দিন সজিব (৩৮), সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদুর চর এলাকার সোহেল (৩৭) ও ভোলা পৌরসভা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মুসলিমপাড়া এলাকার আজমিন আক্তার (২০)। গত ২৫ ডিসেম্বর বিকালে তার বান্ধবী আজমিন আক্তার তাকে ফোন করে মীম নামে অপর এক বান্ধবীর জন্মদিনের পার্টি উপলক্ষে তার মায়ের কাছ থেকে তাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার জন্য অনুমতি নেয়। পরে আজমিনের কথা অনুসারে সে বাসা থেকে ভোলা শহরের নাবরুন সেন্টারের নিচতলায় পার্কিংয়ে আসে। সেখানে এসে আজমিনের সাথে নুর উদ্দিন সজিব ও মো. সোহেল নামে দুজন পুরুষকে দেখতে পায়। এদের মধ্যে সজিবকে ভিকটিম আগ থেকেই চিনত এবং আজমিন সোহেলকে তার দুঃসম্পর্কের ভাই হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয় ও তাদের সাথে একটু ঘুরে এসে তারপর মীমের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে বলে জানায়।
তার কথায় ভিকটিম তাদের সাথে একটি প্রাইভেটকারে করে ঘুরতে যায়। প্রথমে তারা সদর উপজেলার বাঘবামার ব্রিজে যায়। সেখানে গিয়ে আজমিন ও সজিব তাকে বিয়ার পান করতে বললে সে এগুলো খাবে না বলে জানায়। পরে বিয়ারের সাথে পানি জাতীয় কিছু একটা মিশিয়ে সমস্যা হবে না বলে সেটি পান করতে বলে। তাদের অনুরোধে ভিকটিম সেটি পান করে। সন্ধ্যায় ভিকটিমের মা বাসা থেকে ফোন করলে আজমিন ফোন ব্যাক করে তার মাকে বলে রাতে ওই বান্ধবীর (মীমের) বাসায় হাঁসপার্টির আয়োজন আছে। সেটি শেষ করে তারা বাসায় আসবে। পরে তাকে বিয়ার ছাড়াও আরো একটি নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করালে সে গাড়ির মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়ে। এই সুযোগে তারা তাকে চরফ্যাশন উপজেলার খামার বাড়ি রিসোর্টে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে সজিব। তাকে কোনো মতে অর্ধঘুমন্ত অবস্থায় উঠিয়ে খামার বাড়ির ভেতরে গিয়ে একটি রুমে নিয়ে যায়।
সেখানে গেলে সে আবারও ঘুমিয়ে পড়ে। রাত দেড়টার দিকে সে ঘুম থেকে জেগে দেখে তার শরীরের কাপড় পাশে পড়ে আছে। কাপড় পরে আজমিন কোথায় আছে বলে ভিকিটম চিৎকার দিলে সজিব তাকে হুমকি দেয় যে, চিৎকার দিলে তাকে মেরে ফেলবে। এ অবস্থায় পাশের রুমেই আজমিনকে খুঁজে পায় সে। পরে আজমিনকে এখানে কীভাবে আসছে জানতে চাইলে আজমিনও তার সাথে খারাপ আচরণ করে এবং সজিব ও সোহেলের সাথে রাত কাটাতে বলে- ওই রুমে থেকে বেরিয়ে যায়। পরে সজিব ও সোহেল তাকে পালাক্রমে একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরে সকাল ৬টার দিকে সে অসুস্থ বোধ করলে তারা সেখান থেকে বেরিয়ে গাড়িতে করে ভোলায় রওনা হয়।
গাড়ীর মধ্যে এ কথা কাউকে না বলার জন্য বিভিন্নভাবে অনুরোধ ও হুমকি দিতে থাকে। পরে সকাল ১০টার দিকে ভোলা সদরে এনে নাবরুণ সেন্টারের সামনে আমজিন ও তাকে নামিয়ে দেয়। বিষয়টি ভিকটিম বাড়িতে গিয়ে তার মাকে জানায়। পরে গত বৃহস্পতিবার ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে ভোলা থানায় এ তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার আলোকে পুলিশ তাদের তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। ভিকটিমের পরিবার অভিযোগ করে বলেন, মামলার পর থেকে আসামিদের লোকজন তাদের বিভিন্নভাবে মামলা তুলে নিতে লোভ দেখাচ্ছে। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় ভিকটিমের মেডিকেল রিপোর্ট নিয়েও শঙ্কায় আছেন তারা।