মহামানব গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বোধিলাভ ও মহাপরিনির্বাণ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দিন ঘটে বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে। একইদিনে এই মহামানবের তিন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজারের রামুতে মহাসাড়ম্বরে উদযাপন করা হয়েছে বুদ্ধ পূর্ণিমা। রামু কেন্দ্রীয় সার্বজনীন বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে বৃহস্পতিবার সকালে রামু শ্রীকুল মৈত্রী বিহার প্রাঙ্গণ থেকে ঘোড়ার রথ ও ফুলে সাজানো গাড়িসহ শত শত মানুষের একটি মৈত্রী র্যালী রামু চৌমুহনী প্রদক্ষিণ করে আবারো বিহার প্রাঙ্গণে ফিরে আসে।
জগতের সকল প্রাণীর সুখ-শান্তি, বিশ্বের যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা বন্ধসহ, মানবের দুঃখ মুক্তি এবারের বুদ্ধ পূর্ণিমার মূল প্রতিপাদ্য বলে জানান সংগঠকেরা। বুদ্ধ বা বৈশাখী পূর্ণিমার গুরুত্ব তুলে ধরে বৌদ্ধ নেতা নীতিশ বড়ুয়া বলেন, ২৫৬৭ বুদ্ধাবর্ষে এবারে রামুতে বর্ণিল আয়োজনে অত্যান্ত ঝাকজমকপূর্ণ আয়োজনে এই পূর্ণিমা পালন করা হচ্ছে। বুদ্ধ পূর্ণিমা বৌদ্ধদের কাছে সর্বোচ্চ ও সর্ববৃহৎ উপলক্ষ। বিশ্বের শান্তি কামনায় সন্ধ্যায় সমবেত প্রার্থনার কথাও জানান এই সংগঠক।
বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে আজ সারাদিনব্যাপী রামুতে নানান কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। ভোরে বুদ্ধ পূজা, প্রভাতফেরী, সংঘদান শেষে সন্ধ্যায় সমবেত প্রার্থনা ও হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের কথা জানান উদযাপন পরিষদের নির্বাহী সভাপতি তরুণ বড়ুয়া। তিনি বলেন, রামুতে এই প্রথমবারের মতো বৃহৎ পরিসরে বুদ্ধ পূর্ণিমার আয়োজন করা হলো। সামনে বুদ্ধের মহান বাণীকে সকল মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে আরও ব্যাপক আয়োজন করা হবে।
রাজপুত্র সিদ্ধার্থ সমস্ত বিলাসিতা ও রাজসুখ ত্যাগ করে পৃথিবীর সমস্ত মানুষের দুঃখ থেকে মুক্তির পথ রচনা করতে গিয়েই হয়েছেন বুদ্ধ, যিনি বিশেষ জ্ঞান অর্জন করেছেন। তার এই জন্ম, বোধিপ্রাপ্তি ও নির্বাণের দিনকে আন্তর্জাতিকভাবেও পালন করছেন বিভিন্ন দেশ বলে জানান ফারিকুল বিবেকারাম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ শীলমিত্র ভিক্ষু।
বৃহস্পতিবার রামুতে বুদ্ধ পূর্ণিমার মৈত্রী শোভাযাত্রায় রামুর বিভিন্ন বৌদ্ধ পল্লী থেকে শত শত বৌদ্ধ নরনারী অংশগ্রহণ করেন। বৌদ্ধ কীর্তনের মাধ্যমে জানান দেন বুদ্ধের নানান বাণী। হানাহানি, ভেদাভেদ ও শ্রেণী বৈষমহীন এবং সমতার পৃথিবী গড়তে সকলের বুদ্ধ হয়ে উঠতে পারার সম্ভাবনার মহান বাণী ছাড়িয়েছেন মহামতি গৌতম বুদ্ধ এবং এই পূর্ণিমায় সকল বুদ্ধ বাণী সকলের অন্তরে ছড়াবে বলে জানান সংগঠকেরা।