পরীক্ষার আগেই মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং মাদ্রাসা অধ্যক্ষ যোগসাজস করে ৪ জন প্রার্থীর থেকে বিভিন্ন অঙ্কে মোট ৩৫ লাখ টাকা নিয়ে নিয়োগ আগেই চূড়ান্ত করে রেখেছে।

 সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পৌর এলাকার দরগাপাড়া হযরত মখদুম শাহ দৌলা (রহঃ) দারুল খুলদ সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় লোকবল নিয়োগের নামে ৩৫ লাখ টাকার বিনিময়ে মোট ৪টি পদে নিয়োগ প্রদানের অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমিরুল ইসলাম শাহু এবং মাদ্রাসা সুপার আব্দুল হাকিম খার বিরুদ্ধে। এদিকে নিয়োগ পরীক্ষার আগেই ৪টি পদে নির্দিষ্ট ৪জনের নাম চূড়ান্ত হয়েছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ায় বিক্ষুব্ধ চাকুরি প্রত্যাশিরা এবং এলাকাবাসী। অপরদিকে কেবলমাত্র আইওয়াশের জন্য প্রহসনের নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজন নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। 

তত্যানুসন্ধানে জানা যায়, হযরত মখদুম শাহ দৌলা (রহঃ) দারুল খুলদ সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় একজন উপাধ্যক্ষ, একজন অফিস সহকারি  কাম কম্পিউটার অপারেটর, একজন ল্যাব সহকারী ও একজন আয়া পদে লোকবল নিয়োগ করা হবে মর্মে চাকুরি প্রত্যাশিদের নিকট থেকে  দরখাস্ত আহ্বান করেছেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি স্থানীয় দৈনিক যুগের কথা পত্রিকায় একজন উপাধ্যক্ষ পদে, একজন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে এবং একজন আয়া পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয় ।

একই বছর ১৬ মার্চ ল্যাব সহকারি পদে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর প্রতিটা পদে অন্তত ৮ থেকে ১০ জন চাকুরি প্রত্যাশি আবেদন করলেও উপাধ্যক্ষ পদে মাদ্রাসার সহকারি অধ্যাপক মোঃ মোজাফর হোসেন, অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে আন্দারকোটাপাড়া মহল্লার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে ইমন, আয়া পদে পুকুরপাড় মহল্লার মোঃ হামিদুর রহমানের মেয়ে মোছাঃ মুক্তা পারভীন এবং ল্যাব সহকারি পদে নন্দলালপুর গ্রামের মোঃ বিষা প্রামাণিকের ছেলে মোঃ ওয়ারেছ মিয়ার নাম মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ায় ক্ষুব্দ এলাকাবাসী এবং চাকরী প্রত্যাশীরা। এ নিয়ে এলাকায় চরম ইত্তেজনা বিরাজ করছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চাকুরি প্রত্যাশি জানিয়েছেন, শুধুমাত্র আই ওয়াশের জন্য নিয়োগ পরীক্ষার নামে নাটক মঞ্চায়ন করছে কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষার আগেই মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং মাদ্রাসা অধ্যক্ষ যোগসাজস করে ৪ জন প্রার্থীর থেকে বিভিন্ন অঙ্কে মোট ৩৫ লাখ টাকা নিয়ে নিয়োগ আগেই চূড়ান্ত করে রেখেছে। বিষয়টি নিয়ে কথা হলে মাদ্রাসা অধ্যক্ষ আব্দুল হাকিম খান মুঠোফোনে জানান,‘বোঝেনই তো সব। নিয়োগ পরীক্ষার জন্য ডিজি অফিসে গেলে ডিজিকে কিছু না দিলে ডিজি তো চিঠি ছাড়ে না।’ ডিজিকে কত টাকা দিয়েছেন?-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ বলেন, তিনি ডিজি অফিসে যাননি। সবকিছু করেছেন উপাধ্যক্ষ পদ প্রার্থী মাদ্রাসার সহকারি অধ্যাপক মাওলানা মোঃ মোজাফ্ফর হোসেন।

এ ব্যাপারে মাওলানা মোঃ মোজাফ্ফর হোসেন জানান,  মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল কোন কাজ বোঝেন না। তাই তিনি কাগজপত্র নিয়ে ডিজি অফিসে গিয়েছিলেন। বিষয়টি নিয়ে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম শাহু জানান, টাকা পয়সার বিনিময়ে কোন প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করা হয়নি। এসব অভিযোগ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।