একেকটি গাছে ১৫০ থেকে ২০০টি পর্যন্ত মাল্টা ধরে আছে। গাঢ় সবুজ রঙের মাল্টাগুলো পরিপক্ক হচ্ছে। মাল্টা বাগানে সাথী ফসল হিসেবে বিভিন্ন শাক সবজি ও পেঁপের চারাও লাগিয়েছেন তিনি।

মীরসরাইয়ে ভালো ফলন ও বাজারে দাম ভালো পাওয়ায় মাল্টা চাষাবাদের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা। একজনের দেখাদেখি অপরজন এই মাল্টা চাষাবাদের দিকে ঝুঁকছেন। এদিকে ফলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে মাল্টা চাষাবাদে কৃষকদের সবধরনের সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। এবছর মীরসরাই উপজেলায় ৬শ’ বাগান মালিক বাণিজ্যিকভাবে ২৫ হেক্টর জমিতে মাল্টার বাগান করেছেন বলে জানান উপজেলা কৃষি অফিস। ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় সবুজ মাল্টায় স্বপ্ন বুনছেন এখানকার কৃষকরা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মীরসরাইয়ের হিঙ্গুলী ইউনিয়নের পূর্ব হিঙ্গুলী গ্রামে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রবীর বরণ দাশ এক একর জমিতে শতাধিক মাল্টার গাছ দিয়ে গড়ে তোলেছেন মাল্টার বাগান। বাগানে সারি সারি মাল্টাগাছ। ছোট ছোট গাছে ঝুলছে থোকা থোকা মাল্টা। একেকটি গাছে ১৫০ থেকে ২০০টি পর্যন্ত মাল্টা ধরে আছে। গাঢ় সবুজ রঙের মাল্টাগুলো পরিপক্ক হচ্ছে। মাল্টা বাগানে সাথী ফসল হিসেবে বিভিন্ন শাক সবজি ও পেঁপের চারাও লাগিয়েছেন তিনি।

মাল্টাচাষী প্রবীর বরণ দাশ বলেন, ‘ হিঙ্গুলী ইউনিয়নের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা কনিকা মজুমদার প্রথমে আমাকে মাল্টার বাগান করার পরামর্শ দেয়। প্রণোদনা হিসেবে বারী মাল্টা-১ জাতের চারা, সার, কীটনাশক প্রদানসহ নিয়মিত তদারকি করেন। মাল্টা চাষে অধিক লাভ ও নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হওয়ায় আমি এ ফল চাষে ঝুঁকেছি। তাছাড়া ফলটি বারোমাসী হওয়ায় আমার মতো অনেক কৃষক সবুজ মাল্টায় স্বপ্ন বুনছেন। জামালপুর গ্রামের মাল্টাচাষি রসুল আহম্মেদ বলেন, ‘ধান ও আমের তুলনায় মাল্টা চাষ অনেক বেশি লাভের। আমি করোনাকালীন পাহাড়ে ২ একর জায়গায় ১৫০টি মাল্টা গাছ লাগিয়েছি। গত বছর ১০টন মাল্টা ১২ লক্ষ টাকা বিক্রি করেছি। এবার বাগানে আরো বেশি মাল্টার ফলন হবে বলে তিনি জানান।

উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা কনিকা মজুমদার বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মীরসরাইয়ে এ বছর মাল্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। লাভজনক হওয়ায় দিন দিন বাগানের পরিধি বাড়ছে। পাশাপাশি অনেকেই নতুন বাগান তৈরিতে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। মীরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, মীরসরাইয়ের আবহাওয়া ও মাটি মাল্টা চাষের জন্য বেশ উপযোগী। আম চাষের পাশাপাশি অনেক কৃষক মাল্টা, লেবু ও কমলা চাষাবাদের দিকে ঝুঁকছেন। উপজেলায় ৬শ জন বাগান মালিক ২৫ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষা করেছেন। লেবু জাতীয় ফসল সম্প্রসারণ ব্যবস্থাপনা উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের চারা, সার, কীটনাশকসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ, কারিগরি সহায়তা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।