কুষ্টিয়ার মিরপুরের উন্নয়নবঞ্চিত রেলওয়ে স্টেশনটি আধুনিকায়নের ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সকলকে সাথে নিয়ে কাজ করতে চান কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বসহী কমিটির সদস্য কুষ্টিয়ার কৃতি সন্তান ব্যারিষ্টার রাগীব রউফ চৌধুরী।
সম্প্রতি মিরপুর মাহমুদা চৌধুরী কলেজে শিক্ষক শিক্ষিকা বৃন্দ ও স্থ সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ব্রিটিশ আমলে নির্মিত কুষ্টিয়ার মিরপুর রেলওয়ে স্টেশনে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি দীর্ঘদিন ধরে। উপজেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মিরপুর রেলওয়ে স্টেশনটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। এই স্টেশনের কোনো উন্নয়ন হতে দেখিনি। একই সঙ্গে যাত্রী সেবার মানও খুবই নিম্নমুখী।
ব্রিটিশ শাসন আমলে প্রতিষ্ঠিত কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলাধীন এ রেলস্টেশন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ অঞ্চলের মানুষের রেলসেবা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছিল স্টেশনটি। তবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের ছোঁয়া লাগেনি স্টেশনটিতে।
তিনি আরও বলেন, বিগত সরকার রেলের উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা অপচয় করেছে। বিনা প্রয়োজনে রেললাইন স্থাপন করায় প্রয়োজনীয় রুটে রেল সেবার মান বিঘ্নিত হয়েছে। শুধু ট্রেন নয় সব জায়গায় নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করা হলেও সুযোগ-সুবিধা এবং যাত্রীদের সেবার মান উন্নয়নে নজর দেওয়া হয়নি। প্রয়োজন না থাকলেও ব্যক্তিকে খুশি করতে গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে রেলস্টেশন তৈরি করা হয়েছে।
শতোর্ধ্ব বছর বয়সী পুরাতন মিরপুর রেলস্টেশনটি এখন নানা সমস্যায় জর্জরিত ও ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, অনেক দিন ধরে অবহেলার শিকার এ রেলস্টেশনে হয়নি উল্লেখযোগ্য কোনো সংস্কার কাজ। বর্তমানে সেবার চেয়ে বেশি যাত্রী দুর্ভোগের কারণে পরিণত হয়েছে এটি। তারউপর সম্প্রতি সময়ে এখানে স্টেশন মাষ্টার না থাকায় সিগন্যালিং নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ এখন সিগন্যালিং নিয়ন্ত্রণে হয় পোড়াদহ জংশন এবং ভেড়ামারা থেকে। ফলে ট্রেন দূর্ঘটনার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও মিরপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম অত্যন্ত ছোট থাকায় ট্রেনের কোচ/বগি প্ল্যাটফর্মের বাইরে থাকে। ফলে ট্রেনে ওঠানামার সময় যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। একইসাথে
‘স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে শেড এবং কার্পেটিং না থাকার কারণে যাত্রীরা রোদ-বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগের শিকার হন। এছাড়া অপরিচ্ছন্ন টয়লেট, যাত্রীদের বিশ্রামের জন্য কোনো সুব্যবস্থা নেই।’ প্ল্যাটফর্ম বর্ধিত করে এ সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে, মিরপুর রেলস্টেশন ও এর বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখা যায়, ব্রিটিশ আমলে নির্মিত স্টেশনের বর্তমান অবস্থা জরাজীর্ণ। স্টেশনটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। যাত্রীদের বসার জন্য নেই ছাউনি। নামমাত্র একটি শৌচাগার আছে, যা ব্যবহারের প্রায় অনুপযুক্ত।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুষ্টিয়া সদর, দৌলতপুর, ভেড়ামারা উপজেলার জনসংযোগ স্থল এবং উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই অবহেলিত মিরপুর রেলওয়ে স্টেশনটি বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। এখান থেকে মিরপুর ও দৌলতপুর উপজেলা এবং পার্শ্ববর্তী মেহেরপুর জেলাসহ, গাংনী উপজেলার বিপুলসংখ্যক যাত্রী প্রতিদিন এই স্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করে থাকে। স্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন। তাছাড়া চিকিৎসার জন্য ঢাকা এবং রাজশাহী নিয়মিত মানুষের যেতে হয়। কিন্তু দীর্ঘদিনেও অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়ায় যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
দেশের অনেক স্টেশনের উন্নয়ন হলেও মিরপুর স্টেশন দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়নবঞ্চিত। এই স্টেশনের আধুনিকায়ন জরুরি। সেই সঙ্গে সেবার মান বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।