পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার মজিদবাড়িয়া ইউনিয়নে এখন মিরাজ বাহিনীর আতঙ্ক বিরাজ করছে

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার মজিদবাড়িয়া ইউনিয়নে এখন মিরাজ বাহিনীর আতঙ্ক বিরাজ করছে। চাঁদা না দেওয়ায় ভয়-ভীতি প্রদর্শন, মারধর, দখলবাজী,ফিল্মের খলনায়ক স্টাইলে মোটর সাইকেল বহরে রড,হকস্টিক এ জাতীয় দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র সমেত গুণ্ডা বাহিনী নিয়ে গোটা ইউনিয়ন চষে বেড়ানো,বসত বাড়িতে গিয়ে হুমকি ধামকি সহ নানান অভিযোগ পাওয়া গেছে ।
মোঃ মিরাজ মিয়া(৩০) উপজেলার মজিবাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মৃত বারেক মিয়ার ছেলে ও  উপজেলা ছাত্র দলের যুগ্ম আহবায়ক।
জানাযায়, মজিদ বাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক ছাত্রদলের সভাপতি মোঃ নাজমুল আহসান সজল ও সাইদুল ঈদের ছুটিতে ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন। মিরাজের মাদকারবারসহ বিভিন্ন অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করেন তাঁরা। স্বার্থে বিঘ্নিত ঘটলে ক্ষিপ্ততাবশত তাদেরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন মিরাজ। এর রেশ ধরে বুধবার  (২ এপ্রিল) সকালে বিশাল মোটরসাইকেল বহরে দেশীয় অস্ত্রসহ সজল ও সাইদুলকে বিভিন্ন স্থানে তন্ন তন্ন করে খুঁজে বেড়ায় মিরাজ বাহিনী। বাদ রাখেনি ভুক্তভোগীদের বসত বাড়িও‌। সমবেত আবালবৃদ্ধবনিতার সামনে মারার হুমকি এবং গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে খলিশাখালী বাজারে সজল ও সাইদুলের উপস্থিতি টের পেয়ে সেখানে গিয়ে ধাওয়া ও হামলা করে মিরাজ বাহিনী। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও জনতার তোপের মুখে খুব একটা সুবিধা করতে না পেরে পালিয়ে যায় মিরাজ বাহিনী। এ ঘটনা সিসিটিভি ফুটেজে ধারণকৃত রয়েছে। এখানেই শেষ নয়, পালিয়ে এসে মিরাজের সহযোগী আবুল কালাম সজলকে ফোন করে গুলি করে হত্যার হুমকি প্রদান করে।
ঘটনার দিন রাতেই নাজমুল আহসান সজল মির্জাগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। যার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মির্জাগঞ্জ থানা পুলিশ।
স্থানীয় অনেকে জানান,মিরাজ বাহিনীর অত্যাচারে তাঁরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। সবসময় ২০-৩০ টা মোটর সাইকেলে লাঠি,রড নিয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়ায় এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর‌।
মিন্টু মিয়া,সগির খানসহ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ঈদের দুই দিন পর লোকজন নিয়ে সাইদুল ও সজলকে মারধর করার জন্য খুঁজে বেড়ায় ও বিভিন্ন গালমন্দ করে মিরাজ বাহিনী। 
খলিশাখালী বাজারের ব্যবসায়ী ইদ্রিস মাহমুদ, সাইদুল মোল্লা বলেন, ঈদের দ্বিতীয় দিন দুপুরে মিরাজ বিশাল মোটরসাইকেল শোডাউন দিয়ে খলিশাখালী বাজারের এসে সাইদুল ও সজলকে ধাওয়া করে হামলার চেষ্টা চালায়। এসময় তাদের হাতে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র ছিলো। পরে আমরা সকল ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা পাল্টা ধাওয়া দিলে ওরা পালিয়ে যায়।
নাজমুল আহসান সজল ও সাইদুল বলেন, এলাকায় একক আধিপত্য বিস্তারের জন্য মিরাজ একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে তুলেছে। এদের সহযোগীতায় মাদককারবারসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড করে বেড়াচ্ছে এলাকায়। এসব কাজে প্রতিবাদ করায়  এরা আমাদের ওপর কয়েকবার হামলা চালায়। এমনকি গুলি করে প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত দেয়। এ বিষয়ে প্রশাসনের আইনগত হস্তক্ষেপ কামনা করছি। 
এদিকে একই ইউনিয়নের দক্ষিণ চালিতাবুনিয়া গ্রামের ছাত্রদলের কর্মী ইমাম হোসেন নামের এক ভুক্তভোগী জানান, কিছু দিন পূর্বে একটি জেয়াফতের অনুষ্ঠান থেকে তাকে আকস্মিকভাবে তুলে নিয়ে মারধর করে করে মিরাজ।  
অভিযুক্ত মোঃ মিরাজ মিয়া বলেন, আমি মাদকের সাথে জড়িত না। আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ মিথ্যা। 
মিরাজের সহযোগী আবুল কালাম বলেন, আমি কোন হুমকি দেইনি। সজল ভাই আমার আত্মীয় ও তাঁর সাথে আমার ভালো সম্পর্ক। 
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শামিম চৌধুরী বলেন, এই ব্যাপারে আমি আপনার কাছ থেকে প্রথম শুনলাম। ঘটনা সত্য হলে তদন্ত পূর্বক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  
মির্জাগঞ্জ থানার ওসি মোঃ শামীম হাওলাদার বলেন, এবিষয়ে একটি সাধারণ ডায়রি হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।  অভিযোগের বিষয়ে এলাকার লোকজনের মুখে কিছু সত্যতা পাওয়া গেছে।